গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সমন.

২০৩1১।১ কর্ণওয়ালিস্‌ স্ট্রীট, কলিকাতা।

একটা কা

চতুর্থ স'স্কবণ

গুরুদাদ চট্টোপাধ্যায় এও সঙ্গের পক্ষে ভার তবর্ধ প্রিন্টি* ওয়ার্কস্‌ হইতে গ্রগোবিন্দপদ ভট্টাচার্য দ্বার মুদ্রিত প্রকাশিত ২*৩1১।১ কর্ণওয়ালিস্‌ ছাট, কলিকাতা

উৎ্মর্ণ গ্র

এক আশ্িনের প্রথম দিনে তুই যখন এলি, তখন আকাশ শরতের নির্মল আলোয় হাঁস্ছিল; বাতাস শেফালির কোমল গন্ধ বহন করে আন্ছিল ; আর চারিদিকৃকার প্রকৃতির বুকের উপর শাবদ-লঙ্ষ্ীর চরণ-পন্মের ছাঁপ লেগে শুভ সথচিত হচ্ছিল ! তাঁর পরই কান্তিকের এক ঝড়বাদলের রেতে তুই চলে গেলি, গৌরী !

বিচিত্র ছুনিয়ার সবাই আঁজ তোঁকে ভূলে গেছে; কিন্তু তোর সেই যাওয়ার সময়কার অস্ফুট কাঁকৃতি, আর তোর বেদনায় শ্্রীন ছুই চোঁখের অসহায় কাতর দৃষ্টিটুকু, আমি যে এতদিনেও কোঁনও মতেই ভুল্তে পারলাম না।

সে কিঃ ওরে, মাঁছষ কত বড় অসহায়, আর কত ক্ষুদ্র তুচ্ছ তা”র শক্তি, এই সব চেয়ে বড় সত্য কথাটা জানিয়ে দিয়ে গিয়েছিলি বলেই?

"মনোমোহন পাঠাথার” *ই কান্তিক, ১৩২৮ সাল

গৌরী

“বৌদি? ঘরে আছ ?৮”--শিশির বারান্দায় উঠিতে উঠিতে ডাঁকিল।

“কে, শিশির আমাকে ডাকছ ?৮--একটি হাশ্প্রফুল্পমুখী নারী দুয়ারের কাছ পধ্যন্ত আসিয়। কহিল।

প্রাদার চিঠি এসেছে,দেখ ত, আমার কথা কি লিখেছেন”

স্বামীর চিঠি আসিয়াছে শুনিয়া; গৌরীর বুকের মধ্যে যে শোণিত-প্রবাহটা এতক্ষণ শান্তভাঁবেই প্রবাহিত হইতেছিল, সেই শোণিত-প্রবাহটা' একটু চঞ্চল হইয়া উঠিল। একটা ক্ষণিক ভ্রত শোণিতোচ্দ্রীস স্ুগৌর মুখখানিকে একটু রঞ্জিত করিয়! দিয়! গেল। চক্ষু দুইটি একটু নত হইয়া আসিল।

গৌরী

শিশির তাহ! লক্ষ্য করিতে পাবিল না। সে ত্রুত চঞ্চল- কণ্ঠে কহিল, “বাহা-_রে!__চিঠি পড় শীগৃগিব, হাতে করে দীড়িযে থাকলে আমাব কাঁজ হবে না !”--

ইতিমধ্যে গৌরীব বুকেব ভ্রত স্পন্দনটা কিছু শান্ত হইযা আঁসিষাছিল। সে তাহাব দেববটিব অস্থিবতা লক্ষ্য কবিযা মহ হীসিষা কহিল, “তা” তোমাব এত গরজ যদি চিঠি খুলে এতক্ষণ পড়লেই পাধ্‌তে !”__

শিশিব হাসিযা উঠিল, কহিল, “আমি নাকি পবেব চিঠি খুলে পড়ব !__বৌদি' বলে কি ?”__-

"আমি কি তবে তোমাব “পর” হলাম শিশিব ?”-_গৌবী তাহার স্ববটা একটু গাঁ কবিবাঁব চেষ্টা কবিতেছিল ; কিছ শিশিবেব মুখেব বিশ্মিত ভাব তাহাব বিস্ফাবিত চক্ষু দুইটা দেখিযা সে হাসিযা ফেলিল !

শিশিব কহিল,_-"বা,_আমি বুঝি তাই বল্লাম ।__ তুমি পর হতে গেলে কেন? আমি বল্ছিলাম কি,”_

“কি তুমি বল্ছিলে ?”

প্যাও, তুমি হাঁস্ছ, কারু চিঠিই দেখতে নেই,__এই অন্তের চিঠি৮__

“তা, এঅন্ত'ত পপর-নয় কি ?”--

গৌরী

__“কি মুস্ধিল, কারু চিঠি মার কারুর দেখতে নেই, বিশেধ থাঁমের চিঠি ।৮-_

বৌ-দিদি যে «পরঃ কথাটাকে অমন শক্ত করিয়! ধরিয়াছেঃ তাহাতে শিশির ভারি একটা অস্বস্তি বোধ করিতেছিল।

“তা, আমি বল্লে তো "মার বাধা নেই, তুমি খুলে পড় 1”--

শিশির বিপদে পড়িল। বৌদি নিশ্চিন্তভাবে তাহাকে চিঠি খুলিযা দেখিতে বলিল, সে তাহ! পারিল না। তখন সে মিনতির স্ববে কহিল, “তোমার ছুটি পাঁয়ে পড়ি বৌদি, দাদা আমার কথা কি লিখেছেন? তুমি চিঠি পড়ে বল 1”

একটু হাঁসিযা গৌরী চিঠি খুলিয়া পড়িল, তারপর শিশিরের হাতে গু'জিযা দ্রিমা কহিল, "এইবার পড়ে দেখ, তোমার কথা কাজে লাগ্ল না, আছি তা” আগেই বলেছিলাম ।”

শিশিরের প্রকাঁগড চক্ষু ছুইটা ভরিয়া! জল আসিতে ছিল, মে অভিমানের স্বরে কহিল,__"তবে ছাই চিঠি আমি পড়ব না!_ আমি বুঝতে পাচ্ছি, এর মধ্যে তুমি এক চাল দিয়েছ, বৌধি,-_তুমি আমার পক্ষ হ'লে দাদ! অমত কল্পুতেন না”-__

গৌরী

পা, তা? বল্বেই এখন, আমি পপর' কি না”তোমার দাদাটি ভাল, আর দোষ হ'ল যত আমার ! তা ভূমি চিঠিথানি একবারটি পড়েই দেখ না! শিশির, তার পর আমার দোষ দিও !৮__গৌরীর ওষটপ্রান্তে একটু হাসির রেখা মুখখানিকে ঈষৎ উজ্জল করিয়া তুলিতেছিল !

তখন শিশির চিঠি তুলিযা লইয়া পড়িল; পড়া শেষ হইলে চিঠ্রিখানি গৌবীর সম্মুথে ছু*ড়িযা ফেলিযা দিয়া কহিল-- পইং--ভারি কি না লিখেছেন! আমি ছোট বলে কেউ আমার কথা গ্রাহিই করে না! তুমি দাদার পক্ষে তুমি দাদার পক্ষে ! তা* আমি বেশ বুঝতে পাচ্চি! চল্লাম আমি দক্ষিণ-পাঁড়ায়। মেথানে আজ আমাদের “কাব আছে! ছুপুব ঘুরে না গেলে আর আসছি নে, থেকো ভাত নিষে বসে, দাদার পক্ষে যাওয়ার মজাটা টের পাবে এখন !

শিশিরের আহার না হওযা পধ্যস্ত গৌরী বে উপবাসী থাকিবে, তাহা! শিশির বিলক্ষণ জানিত। একটু ছোট থাকিতে দুরস্ত শিশির গৌরীকে এমনি করিয়! মধ্যে মধ্যে ভয় দেখাইযা বাড়ী হইতে বাহির হইয়। যাইত; তারপর বৌদিদির কষ্ট হইবে ভাবিয়া ঘণ্টা-খানেকের মধ্যেই বাড়ী ফিরিযা আসিয়। আহার করিত এবং একটা নূতন আব্‌দীর ধরিয়া গৌরীকে ব্যতিব্যস্ত

গৌরী

করিযা তুলিত ! কিন্ত ইদানীং একটু বড় হুইযা! এমনটা আর বহুদিন করে নাই।

আজ নাকি শিশির বড় রাগিয়! গিযাছিল, তাই বৌদিদিকে ছেলেবেলার মতই জব্দ করিবে বলিয়! বাডী হইতে বাহির হইয়া পড়িবাব জন্য ক্রুতপদে উঠানে নামিযা আসিল

গৌরী হাসিতে হাঁসিতে ডাকিয়া কহিল, “ওবে পাগলা-_ শিশির! ওবে আমাব মাথা খা”স্‌যাস্নে। এতটা বেলা হযেছে, একটু কিছু খেষে যা? 1”

বৌদিদিব কথা শুনিযা শিশিব ফিরিয! দাডাইল, কহিল, “তোমার অত বড মাথাটা নাকি আমি খেতে পাবি? তা, ভাঁত আমি সেই ছুপুবের পব ছাঁডা খাচ্চিনে,_বুঝবেই এখন মজাটা কেমন 1”_-

“তা” ভাত না খাস, যা” এখন দঃ তা খেষে যা+ !»--

গৌরী ঘরে ষাইযা একটা পাথুরে বাটিতে করিষ৷ কিছু মুড়ি, থানিকট। ঘবে-পাতা৷ দধি কযেকটা কল! লইয৷ আসিল ! বাঁবান্দায একখান! ছোট আসন পাতিল, তাবপব শ্রেহতরলকণ্ে ডাঁকিল, "লক্ষী দাদা আমা, কিছু থেষে যাঁও, নইলে আমার মনটা অস্থিব থাকবে এখন, কোনও কাজই কম্ৃতে পার্ব না !”--

বারান্নায উঠিতে উঠিতে শিশির তাহার ক্ষুদ্র অধর

গৌরী

উল্টাইয়। কহিল;-_-“ইঃ,ভারি লক্ষী কি না !__মেয়েগুলোই লক্ষ্মী হয়, ছেলেদের লক্গী হওয়ার জন্য ভারি দায় পড়ে গেছে !”-_

মুহূর্তমধ্যে আসনের উপর বসিয়া পড়িয়া শিশির আহাবে মনোযোগ দিল। গৌবী সনুখে ধাড়াইয! দুবস্ত দেবরটির থাওয়া স্বেহীক্র-সজল-চক্ষে দেখিতে লাগিল

থাইতে খাইতে শিশির কহিল, “বেশ দৈ, বৌদি আর আছে?”

গৌরী হাসিয! কহিল।__”আছে,__দেব ?”-_

"দেবে না তকি তোমার জন্যে রাখ বে?”

গৌরী দধিব পাত্রটা ধরিযাই লইযা আমিল; শিশিব চাহিয়। দেখিল, বেশী নাই! এক চামচ দিতেই শিশিব তাভ। হাত পাতিয়া লইল, একটু মুখে দিযাই কহিল, “ইস্‌, এগুলি টকে গেছেতআমি আর নেব না 1”--

দেবরটির ভাব দেখিযা গৌরী হাসিতে হাসিতে কহিল, “এরি মধ্যে ট'কে গেল, শিশির? আর একটু দি!_এই কত রযেছে !”

“রযেছে রযেছে )-_আমি আর নেব না!”

সন্তানহীন! গৌবী তাহার দুরন্ত দেঁববটির উপরেই তাহার ক্ষধিত মাতৃহদয়ের সমস্ত ন্নেহধারা বর্ষণ করিয়াছিল! তাহার

গৌরী

আবার প্রতিপালন করিয়া, তাহার দুরস্তপণ| সহ কৰিয়া! গৌরী পবম তৃষ্তিলাভ করিত

যেদিন শিশির কোনও আবার না করিত সে দিনট! গোৌরীর কাছে ব্যর্থ মনে হইত ! ঘেদিন শিশির শাস্তশিষ্টভাবে দিনটা কাটাইয। দিত, সেদিন গৌরীর বুকের মধ্যে কোথায় যেন একটা মুছু বেদনা, একটু অন্বন্তি জাগিযা উঠিত!

শিশির যখন এতটুকু ছোটটি ছিল, তাহার তখনকার আবদাবেরঃ দুরন্তপণার ইতিহাসটি স্মবণ করিযা, আলোচনা করিসা, গৌরীর হাদয পুলকে চঞ্চল হইযা উঠিত, চোখের কোণে শ্রেহাক্রু বিন্দু সঞ্চিত হইত!

কিন্ত শিশিব যে এখন বড় হইয| উঠিতেছে! আর তসে ছেলেবেলাব মত আব্দাব করিয়া, সময়ে অসমযে ছুরস্তপণা কবিষা ব্যতিব্যস্ত কবিযা তুলে না!

তাই, কতদ্দিন পবে শিশিবেব আঁজকাঁব এই অভিমানটুকু, আবদাবটুকু, গৌরীব বড় ভাল লাগিতেছিল। তাহাব বুকের মধ্যে একটা বিপুল ন্নেহোচ্ছ্াস জাগিয়! উঠিয! তাহার ক্ষুধিত মাতৃহাদযথানিকে আচ্ছন্ন কবিয! দিতেছিল।

তাহাব অধবপ্রান্তে মৃছু হাসির বেখা, নয়ন কোণে স্নেহাক্রুবিদ্দু জাঁগিয! উঠিযাছিল।

গৌরী

গৌরী একদৃষ্টিতে ছুরস্ত ছেলেটির স্তুগৌকন মুখখানির দিকে চাহিয়া চাহিয়া তাহার খাওয়া দেখিতেছিল। আহার শেষ করিয়া, জলের গেলাস মুখের কাছে তুলিযা ধরিয়া শিশির গৌরীর মুখের দিকে চাহিল, দেখিল, তাহার চোখের কোণে অশ্রু; গেলাস নামাইয। ক্ষুন্বস্বরে শিশির কহিল, &বৌদি;” তোমার চোখে জল কেন ?”

গৌরী হাঁসিযা কহিল, “তুই দৈ খেলি না কেন?”

শিশির বিশ্মিতভাবে কহিল, “বাঃ, এই যে কতটা খেলাম ? আচ্ছা, যেটুকু আছেঃ তোমার সঙ্গে বসে ভাত দিযে খাব এখনও”

গৌরী হাসিয়া উঠিল

শিশিরও অপ্রতিভভাবে একটু হাসিল। হাত মুখ ধুইযা শিশির কহিল, “বৌদি,” দা”থানা দাও ত1»

“কেন রে, দা” দিযে কি হবে ?”

-পাতা কাট্ব 1».

গৌরী হাসিয়া কহিল,"বৌ 'আাঁন নাই, ভাত খাবে কে ?”__

"বৌকে পাতা কেটে আমি ভাত খাঁওয়াৰ না, সে পার তুমিই খাইও!--না, সত্যি, দাখানা দাও, তোমার কুমড়া গাছটার মাচা করে দেব?”

গৌরী

_-?কেন, ক্লাবে ধাবি না?”

সপ্রতিভ শিশির উত্তর দিলঃ "সে বেতে হয বিকাল-বেলা দেখা বাবে 1৮

ক্লাবে, যাইতে হইবে, এবং দুপুর কাটিয়া গেলে বাড়ী আপিযা বৌদিদিকে দাদার পক্ষালম্বনের জন্য জব্দ করিতে হইবে, সে কথা শিশির একেবারেই তৃপ্লিয! গিয়াছিল।

গৌরী ঘবের ভিতর হইতে দা” আনির! দিলে, সেই বলিষ্ট বালক, বৌদিদির কুমড়াঁগাঁছে মাচা করিয়া! দিবার জন্য একট আস্ত বাঁশ টানিযা আনিয়! খণ্ড করিতে লাগিষা গেল !

গৌরী ডাকিয়া কহিল; “ওরে হাতে চোটু লাগে না

যেন,__”

ওষ্ঠ উল্টাইযা শিশির কহিল, “ই:১ চোট লাগে আর কি! তুমি বাঁও তোমাৰ কাজে! নারকেলের বড়ি ভেজ কিন্তু-_বুঝলে ?”

গৌরী চলিয়া গেল

শিশিরের যখন গাঁচ বংসর বয়স তখন তাহার মাতা- ঠাকুরাণী স্বর্গগত হযেন। গৌরীর বয়স তখন পনেব বংসর। তার চারি বৎসর পূর্বে সে প্রথম এই সংসারে প্রবেশ করে। শিশিরের জোষ্ঠ ভ্রাতা শচীনের সঙ্গে গৌরীর বিবাহেব কিছু- দিন পরেই পিতাঁর কাল হওয়াতে, সংসার-প্রতিপাঁলনের ভাব শচীনের উপরেই পড়ে! ম্মুতবাং তাহাকে কলেজ ছাড়িযা চাকুরীর চেষ্টা করিতে হয়। পঠদ্দশীয় শচীনের হৃদযে কতকগুলি উচ্চ আশা ছিল, পিতৃবিযোগের পর সে গুলি ছিপিখোঁলা শিশিশ্থ কপূরের মতই উড়িয়া গেল।

কলেজের অধ্যক্ষ তাহাকে যথেষ্ট ম্নেহ করিতেন; তাহাই সুপারিশে কলিকাতাঁর এক সদাগরী আফিসে চল্লিশ টাকা বেতনের একটা কেরাণীগিি জুটিল) কেক বসবে বেতন কিছু কিছু বাড়িয়া ৫৫২ টাকায দীড়াইয়াছিল। সংসারের অবন্থ। কোনও দিনই তেমন শ্বচ্ছল ছিল না; পিতামাতার আদ্ধাদিতে কিছু ধারকর্জ, দৌকানদেনাও হইয়াছিল। এই সামান্ত আয় হইতেই সমন্ত শৌধ হওয়। দরকার। ম্ৃতরাঁং কলিকাতার

১৩

গৌরী

মেস-থরচ বাদে যাহা উদ্বৃত্ত হইত, শচীন প্রাণাস্তেও তাহ! হইতে একটি পয়সাও অন্য কোনও ব্যয় করিতে চাহিত না। বাড়ীতে সংসার-থরচের জন্য যে নির্দিষ্ট টাকা কয়েকটি পাঠাইত, গৌরী পাঁকাগৃহিণীর মতই তাহ! দ্বারা সংসারটি বেশ গুছাইয়। চালাইয! লইত |

বাড়ীর চারিধারের জমিটুকু, কিছু টাঁকা খরচের উপর হইতে বাঁচায়, গৌরী বেশ কবিয়া ঘিরিযা লইয়াছিল। ক্ষুত্র সংসারটির উপযূক্ত নানা প্রকীর তরকারী শাঁকশব্‌জি গৌরীর বন্ধে সেখানেই জন্মিত। বাড়ীথানির কোথায়ও বাজে জঙ্গল ছিল না) ঘব-দুযাবগুলি পরিষ্কার পবিচ্ছন্ন সাজান গুছান ! কোথাও এতটুকু ত্রুটি লক্ষিত হইত না কাহাব নিপুণ হন্ বাড়ীখানিকে শ্রন্দর করিযা রাখিবার জন্য যেন সর্বদাই নিযুক্ত রহিয়াছে, তাহা দেখিলেই বুঝা যাইত !

কমলা কখন স্বযং আসিয়!, বাঁড়ীথানির উপর তাহারই চরণম্পর্শ দিয়। গৌরীকে ছু'ইয়া আশীর্বাদ করিয়া গিয়াছেন ; তাহাবই মায়া স্পর্শ পাইযা, সমন্ত বাড়ীথানি গৌরীকে কেন্দ্র কবিযা, কমলার পাদপীঠ শতদলটির মতই অপূর্বব শ্রাসম্পন্ন হইয়! উঠিয়াছিল !

সংসারে এক বৃদ্ধা পিলি ছিলেন, তিনি ত্রাতার ত্রাতৃ-

১১

গৌবী

বধূর মৃত্যুর পর তীহার হবিনামের মালাটিই সম্বল করিযা লইযাছিলেন। বাঁডীর পাশে একটি অনাথ বর্ধীযসী স্ত্রীলোক ছিল, তাহাকে খাইতে দিবার কেহ না! থাকাতে গৌবী তাহাকে সংসারতৃক্তা করিয! লইযাছিল। সে সংসাবেব অনেক কার্যে গৌবীব সহায়তা কবিত। এই দুইটি বৃদ্ধা এবং গৌবী শিশিবকে লইয! এই ক্ষুদ্র সংসারটি রচিত হইযাছিল। শিশিবের একটি ভগিনী ছিল, তাহা নাম "শ্রী পিতাঁমাত। জীবিত থাকিতেই শ্রীব ব্ড-ঘরে বিবাহ হইযাছিল | শ্রী বংসরেব মধ্যে দুই একবার পিত্রালযে আমিত, কোনও বসব আসিতও না।

শচীনেৰ পিতামাতাঁব মৃত্্যুব পব নয বৎসর কাটিযা গিযাছে। শিশিব এখন চৌদ্দ বসবে গৌবদেহ বলিষ্ঠ কিশোব , তাহার বাল্যেব চঞ্চলতা! অনেকটা কাটিঘা গিযাছে , কিন্তু গৌরীর কাছে তাহার শিশুটির মতই আবদাব, দৃবস্তপণ। এখনও দুব হয নাই। পনেৰ বৎসরের বাপিকা যেদিন পাঁচ বৎসরেব মাতৃহীন শিশুব লালনপালনের ভার গ্রহণ কবিযাছিল, সেইদিন হইতেই সে তাহাব বিপুল স্নেহপূর্ণ হৃদয়খানি সেই অবোধ শিশুটির দিকেই একাস্তভাবে প্রসারিত কবিয। দিবাছিল। বযোবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাহাব ক্ষুধিত মাতৃহ্ৃদষ যতই উন্মুখ, আকুল হইয! উঠিতেছিল,__ত্ততই সে এই মাতৃহীন দুবস্ত

১২.

গৌরী

বালকটিকেই বুকের কাছে টানিয়! লইয়া সম্তানহীনতার ছঃথ দৈস্য ভূলিতে চাহিতেছিল !

শিশির খন তাহার জমত্ত ন্নেহমমতা-টুকুই একেবারে নিঃশেষ করিয়। আকর্ষণ করিয়া লইল, তখন গৌরীর হৃদয়ে আর কোনও ক্ষোভই রহিল না, সে সত্যই দেখিল পরম তৃপ্তিতে তাহার অন্তর পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে

গ্রামে একটি ভাল ইংরাজী বিদ্যালয় ছিল ; শিশির সেই বিদ্যালয়েই পড়িত। ভাল ছেলে বলিয়া স্কুলে তাহার নাম ছিল, শিক্ষকেরা তাহার 'অনেক ভরসা রাখিতেন | স্থতরাং শিশির যখন চৌদ্দবসর বযসেই প্রবেশিকা-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া কুড়ি টাকা বৃত্তি পাইল, তখন কেছহুই তেমন বিশ্িত হন নাই!

বৃত্তি পাওযার খবর আসিতেই শিশির এক প্রস্তাব করিয়! বসিল। কলেজে পড়িবার ভন্য যখন তাহাকে কলিকাতা যাইনেই হইবে,তখন মেসে না থাকিয়া, ছোট একটা বাস। যদি করা যায়, তাহা হইলে সকলে মিলিয়। দ্বাদার সঙ্গে একত্রে থাকার সুবিধা হয। তাহাঁর বৃত্তির টাকা দাদার বেতন বৌদিদির হাতে দিলে তিনি ঘে ন্বচ্ছন্দে কলিকাতার বাসাখরচ চালাইমা লইতে পারিবেন, এবিষয়ে শিশিরের বিন্দুমাত্র সন্দেহ

১৩

গৌরী

ছিল না! বৌদিদিকে ছাড়িয়া সে যে কল্লিকাতার মেসে পড়িয়া থাকিতে পারিবে না, ইহাও সে তাহার বৌদিদির কাছে দৃঢ়কণ্ঠে বারংবার ঘোষণা করিতেও ছাড়িল না! প্রস্তাব শুনিয়া প্রথমে গৌবীরও খুব ভাল লাগিয়াছিল। কিন্ত কথাটাকে যতই সে মনে মনে আলোচনা করিতে লাগিল, ততই তাহার মনে হইতে লাগিল, শিশিরের এই সঙ্কল্লটিকে কার্যে পরিণত করার পক্ষে বহু বাধা রহিযাছে !

শচীনের মাত। তাহার মৃত্যুর পূর্ববক্ষণে শচীন বধূকে ডাকিয বলিয়াছিলেন, "এ ভিটেয সন্ধ্যে আালীৰ ভার তোমাঁদেব উপর ! লক্ষ্মী মা, আমার শ্বশুরের ভিটে 'অন্ধকাঁব করে কোথায়ও যেও ন1 ।৮-__

মরণপথযাত্রিনীর আদেশ লঙ্ঘন কবা সম্ভব নহে; তারপর এই সাজান-গুছান বাড়ীখানি ছাঁডিয়। কষেক বতসবেব জন্যে বিদেশে গেলে বাড়ীর ঘে আঁব কিছুই থাকিবে না

এই বাড়ীর সঙ্গে। ইহার প্রত্যেক গাছপালার সঙ্গে, কত নখের, দুঃখের, বেদনার কাহিনী জড়িত রহিযাঁছে ! গৌবীব স্বহন্তে রোপিত গাছগুলির, লতাগুলির প্রত্যেকটিই যে তাহার সন্তভান-তুল্য! তাহারা যে গৌরীর কাছে শুধু জড় বৃক্ষ-লতা- গুল্সই নহে; গৌরী বদি চলিয়া যায়, তুঙ্গদীমঞ্চে নিত্য সন্ধ্যায়

১৪

গৌরী

প্রদীপ জঙসিবে না, গৃহদেবতার ভোগ হইবে না, সে নিজহন্ে পূজার ডালি গুছাইবে না, লাজাইবে না, পয়ন্থিনী গাঁভীটি যে প্রতি সন্ধ্যায় দুয়ারে আসিয়া তাহার মুখের দিকেই চাহিয়! ল্ম্প্ম্বরে ”ও-__ম1-_” বলিয়া ডাকে! যাহাকে সেনিঙ্গে খাবার না দিলে থায় না, তাহাঁকে কাহার কাছে রাখিয়। যাইবে? খাঁচার ময়নাটি “মা, ডাঁকিতে শিখিয়াছে, গৌরী জল ন! দিলে, থাবার না দিলে, সে থায় নাঃ __সেই প্রিম পাথীটিকে কোন্‌ আকাশে উড়াইয! দিয়া যাইবে? বিড়ালটার ছানাগুলির কেবল চক্ষু ফুটিয়াছে,__গৌরী যদি চলিয়া যায়, বিড়ালী ছাঁনাগুলিকে লইযা কাহার আশ্রয়ে যাইবে ?

এত কথা ভাবিতে গৌরীর দুই চক্ষু অশ্তপূর্ণ হইয়া উঠিত ! কিন্তু সকলেব উপরে সে মে শিশিরের কাছে থাকিতে পারিবে, তাহাই মনে কবিয়। সমস্ত বন্ধন, সমস্ত মায়! কাটাইযা উঠিবার জন্য একটা! আগ্রহ তাহার অন্তরের মধ্যে প্রবলভাবেই উন্মুখ হইয়! উঠিত!

কিন্তু যাহার মতের উপর সমন্ত নির্ভর করে, তিনি যে প্রস্তাবে স্বীকৃত হইবেন, তাহা গৌরীর একবারটিও মনে হইত না, সব বন্ধন কাটান সম্ভব হইতে পারিত, কিন্তু জননীর অস্তিমশয্যার আদেশ লঙ্ঘন করা+_ _না॥ তাহা কেন মতেই সম্ভব হইবে না

১৫

গৌরী

তবু শিশিরের গীড়াপীড়িতে গৌরী স্বামীকে সব কথা খুলিয়া লিখিল, গৌরী যাহা ভাবিয়াছিল, তাহাই হইল ) শচীন বাড়ী ছাড়িয়৷ কলিকাতায় যাওযার পক্ষপাতী নহে। বিশেষ জননী তাহার অস্তিমশয্যায় যে আদেশ করিয়। গিয়াছেন, তাহ। লঙ্ঘন করা অসাধ্য !

গৌরী শচীনের পত্র পড়িবার জন্ত শিশিরকে দিল, শিশির তাহা! একবারটি দেখিয়াই গৌরীর সম্মুথে ছুড়িয়া ফেলিয়।! দিল!

শিশির দেখিল, তাহার কথা কোনও কাজেই লাগিল না) তখন সে বড় গোল বাধাইল। গোৌবীব উপর অভিমান করিয়া, গৌরীর সঙ্গে ঝগড়া করিয়া, নৃতন নূতন আবার ধরিযা, গোৌবীকে ব্যতিব্যস্ত করিয়! তুলিল।

শিশির বাহিরে দিখ্রিজধী; শিশির বিদ্ালযের আদর্শ ছাত্র; গ্রামের ছেলেদের সন্রমের পাত্র কিন্তু বাড়ীতে গৌরীর কাছে শিশির সেই পাঁচবসরের শিশুটির মতই অস্থির দুরস্ত |

সংসারে শুধু একটি মানুষই ছিল; সে গৌরী, যাহার কাছে আসিয়া, শিশির নগ্ন, সরল কোলের শিশুটির মতই বীপাইয়া পড়িত।

১৬

গৌরী

গৌরী কহিল, “তা তুই যখন এতটা বাড়াবাঁড়িই কর্ছিন, তখন আমি না হয় আর একবার লিখে দি,”

শিশির বামচক্ষুর প্রান্তটা একটু সম্কুচিত করিয়৷ ভ্রুত, অভিমানক্ষুব স্বরে কহিল; “ছ' তা? লিখবে বই কি! “তুমি সাপ হয়ে কাট, আবার রোজা! হয়ে ঝাড় !-তুনি লেখ আর দাদ! ভাবুক, 'বুড়োছেলে বৌদিদিকে ছেড়ে থাকৃতে পারে না! ওগো, তা” আমি থাকৃতে পারব, পারব 1”

শিশিরের শ্বর গাঢ় হইয়া আসিল, চক্ষু দুইটা জলে ভরিয়! গেল; সে তাড়াতাড়ি মুখ ফিরাইয়! লইয়া দীতে ওঠ চাপিয়াঃ আসন্ন ক্রন্দনের বেগটাকে রোঁধ করিতে চাহিল।

গোৌরীর চক্ষুও অশ্রুসিক্ত হইয়া উঠিল; কয়েকদিন পরেই শিশির কলিকাতায় চলিয়া যাইবে বলিয়া গৌরীর মনটা ভার হুইয়াই ছিল, আজ শিশিরের কথায় হঠাৎ তাহার বুকের মধ্যের রুদ্ধ আবেগটা সজোরে ঠেলিয়া বাহির হইতে চাহিল। সে কোনমতেই অশ্রু রোধ করিতে পারিল না শিশিরকে কোলের কাছে টানিয়। আনিয়া কম্পিতকঠে তাহার মাথায় হাত বুলাইতে লাগিল। তাহার দুই গণ্ড প্রাবিত করিয়া বিন্দুর পর বিন্দু অশ্রু নামিয়। আমিতেছিল

১৭

ত্ঠ

দীর্ঘ ছয় বৎসর কাটিয়া গিয়াছে ইহার মধো শিশির এম। এন পরীক্ষায় শর্ষস্থান অধিকার করিয়াছে। পরীক্ষার ফল বাহির হওয়ার অল্পদিন পরেই শিশির একটি সরকারী কলেজে অধ্যাপক নিযুক্ত হইয়াছে।

পরবন্তী গ্রীত্বাবকাশে শিশির বাড়ী আসিয়াছে

মধ্যাহ্ন অতীতপ্রায়, গ্রীষ্মের দীর্ঘ দিবা কাঁটিতে চাহে না পল্লীর শ্তামল বনচ্ছায়ায় পাঁধীর গান বিরল হইয়াছে। গৃহেব অলিন্দে কপোত-যুগলের মৃদুল কৃজন, আতবুক্ষের ঘন পল্নবান্তবাল হইতে ঘুঘুর উদাস স্তর, অন্তরমধ্যে একটা! স্বপ্লালোক রচনা করিয়া তুলিতেছিল; কোথায় যেন একটি অতীত স্বৃতির পুলক- ব্যাকুল করুণ স্বর বড় মৃছু মধুর বাঁজিতেছিল, সেই স্থরটীকে যেন ধর! যাইতেছে নাঃ বুঝ! যাইতেছে না। তবু অন্তর একটা অনির্দিষ্ট স্থুথের কুগ্ঠায় বেদনায় রহিয়৷ রহিয়া শিহরিতেছিল।

শিশির একট! টেবিলের কাছে বিয়া বমিয়৷ একখানা

১৮

গৌর

বাঙ্গালা বহির পাঁত৷ উল্টাইতেছিল) কপোঁতের কৃজন, ঘৃঘুর উদাস সুর, তাহারও অন্তরে একটা! সাড়া দিতেছিল। বহির লেখায় মন:মংযোগ হইতেছিল না। শিশির হঠাৎ বহি ফেলিয়া দিয়া, চেয়ার সরাইয়! উঠিয়া দাড়াইল, ডাকিল, “বৌদি+,*__

গৌরী মেই কক্ষের মধ্যেই একটু দূরে বসিয়৷ পান সাজিতেছিল। আহ্বান শুনিয়। সে তাহার শাস্ত দৃষ্টি উৎসারিত করিষা শিশিরের দিকে চাহিল, “কি শিশির, ভাঁকলে 7

“বৌদি”, দাদা এলে কাল তুমি সব কথা গুছিয়ে বল্বে ত?”

গৌরী চক্ষু একটু নত করিযা মৃদুস্বরে কহিল, “তা” বল্ব, কিন্তু”

কিন্ত কিঃ বৌদি ?__

একট! বাধা পাওযার সম্ভাবনা দেখিয। শিশিরের বাগ হইতেছিল ; রাগট! সে টেবিলের উপরকার বাঙ্গাল! বহিথানণির উপর ঝাঁড়িল; বহিখানি তুলিযা লইয়া, একটু জোরে আবার টেবিলের উপরেই ফেলিয়! দিল !

গৌরী হাসিল, কহিলঃ প্তা” বইটার উপর রাগ কছ্ুলে কি হবে?_তুমি নিজে বল্তেও পার়ুবে”-এখন আর ছোটটি নও১৮__

১৯

গৌরী

_-"তা” হলে আর তোমার দোহাই দিচ্ছি কেন ?--তুমি পার্বে কি না তাই ম্পষ্ট করে বল,”--

শিশিরের অস্থিরত। দেখিব! গৌরী ক্রমাগতই মৃছু মৃছু হাঁসিতেছিল। গৌরীর হাসি দেখিযা শিশির চটিযা! গেল

__্যাঃ বলব তা” পান্বেই নাঃ পার শুধু হাস্‌তে 1৮

গৌরী হাপিয়া কহিল, "আচ্ছা শিশিব, তুই কলেজে ছেলেদের পড়াস্‌ কেমন করে 1--তারা তোকে মানে ?1-

শিশির এবার হালিয়! উঠিল। “কেন, তা” বল্ছ কেন, বৌদি? ?*-_

“তুই এখনও যেন ছোটটিই আছিদ্‌! তেম্নি আস্থির, তেমনি চঞ্চল !--তাই আমার মনে হযঃ ছেলেগুলো তাদের এই ছোট্ট অধ্যাপকটিকে মানে কি ন! 1”

ছেলে-মহলে শিশিরের সম্ভ্রম কতটুকু, তাহা আর সে ভাঙ্গাইয়া রলিল না! গৌরী তাহা বথেষ্টই জানিত ! শিশিব ওধু একটু হাঁসিল, তারপর ছু” একবার গলাটা একটু ঝাড়িয়া লইয়। কহিল, "সে কথা যাক্‌, আমি যা” বলি শোন, তুমি বেশ ক'রে বুঝিযে বলে শ্বীকাঁৰ করাও, তিনি যদি চাকুরী ছেডে দিয়ে সত্যি বাড়ী এমে না বসেন, আমি আমার কাজ ছেড়ে দেবই !”

১৩

গৌরী

গৌরী হাতের পান বাটার উপর রাখিতে রাখিতে কহিল, “তা; তুমিই সাম্না-সাম্নি মীমাংসাটা ক'রে ফেলনা কেন ?-- আমার দোহাই কেন ?”-_

--”দে আমার সাহসে কুলায় নাঃ বৌদি”! দাদার সাম্‌নে বেশী জেদ করে কোনও কথা বল! আমার দ্বার! হবে না আমি বলে রাখছি ;--ও তোমাকেই বল্তে হবে, এবং ব্যবস্থা করে দিতে হবে )__ নইলে আমি চাকুরী ছেড়ে দিযে বাড়ী বসে থাকৃব, তা"তে তোমার এতটুকুও সন্দেহ কর্বার নেই কিন্তু !”-_

“শোন একবার পাগল ছেলের কথা! সবাই চাকুরী ছেড়ে এসে বন্বি, সংসার চল্বে কি কবে ?”--

তুমি ৪*।৫*২ টাকা আয়ের দিনে যদি সংসার চালাতে পেরে থাক, দাদ! চাকরী ছাড়লেও আমি ২৫০২ টাকা পাব, তাতেও তোমার সংসার চল্বে না ?”--

“তবু শক্তি থাকৃতে পুরুষ-মানুষ চাকুরী ছেড়ে এসে বাড়ী বসে থাকবে, এটা» শিশির, তুমিই কি ভাল বলে মনে”-_

_-“কন্ছি "যে হুঃসহ পরিশ্রম করে দাদ! সংসার রক্ষে করেছেন, তা” আমি ভুলিনি”! তাকে বিশ্রাম দিতেই হবে, এবং সেটা যে এখন থেকেই, তা, আমি পরিক্ষার বলে দিচ্ছি”

গৌরী

পানগুলি গুছাইয়া ভিবায় রাখিয়া! গৌবী উঠিয! দাড়াইল। কহিল, “তুই পরিষ্কার বলতে কেবল আমাকেই পারিস্‌্! কেন, তুই এখনও সেই ছোটটিই থাকৃবি ?”

গৌরীর হৃদযে একটি অনাবিল আনন্দ তৃপ্তিব উচ্ছাস মুখর হইয়া উঠিতেছিল ! এই দিখ্রিজধী যুবকটি যে এখনও কাছে আসিয়া, অবোধ সরল শিশুটির মতই যখন তখন'আব্দার পরিপুবণের জন্ত তাহার উপরই দাঁবী করে, অত্যাচাব কবে, ইহা মনে করিয়া! এই নির্ভবপটু ম্নেহ-পাত্রটিব প্রতি তাহার লেহ আরও নিবিড় হইয়। উঠিতেছিল !

--“আমি বাপু, কিন্তু বলতে পায়ুব না»”-- গৌরী দুয়াবেব দিকে ফিরিযা পীভাইল। তাহার তান্ুল-রাঁগ-বঞ্জিত অধরে একটু মৃছু হাঁসি ক্রীড়া করিতেছিল।

শিশির দৃঢ়কঞ্ঠে কহিল, “তা তোমাকে বল্তেই হবে বৌদি”, নইলে”__

গৌরী ফিরিয়া দাঁড়াই! কহিল- “নইলে তুমি কি কল্ৃতে চাও, শিশির ?-_

-কি কন্ুতে চাই ?__একটু এগিযে এসে দেখ”__ গৌরী অগ্রসর হইয়া 'আসিল ; শিশির চেয়ারে উপর বসিষা পড়িযা, কাগজ, কালী, কলম টানিয। লইল, এবং দ্রুত নিপুণহত্তে

গৌরী

ইংরাজিতে যাহা লিখিয়। গেল, তাহা! গৌরী দড়াইয়। পড়িত্ে- ছিল। গৌরী কিছু ইংরা্থী জানিত এবং চিঠিপত্রগুলি পড়িযা সাধারণ-ভাবে বুঝিতে পারিত।

গৌবী চিঠি পড়িয়া! কহিল, “তুমি কি ক্ষেপলে, শিশির ?”

শিশির সত্যই বে পদত্যাগ-পত্র লিখিযা শেষ করিবে, গৌরী তাহা একবাবও মনে করিতে পারে নাই।

“তবে চিঠি আজ.কাব ডাকেই রওনা করে দেব ?”-_ ভ্রঘুগল কুঞ্চিত কবিযা শিশিব কহিল

_-তাও কি হয? আচ্ছ! কি বল্‌তে হবে বল, আমি সব আর গুছিষে বল্তে পানু না |”

_-তুমি যা 'ভাঁল মনে কব ঝলো, আমার বা” বলার তা, সবই তোমাঁকে বলেছি !”__

গৌবী একটু হামিয়৷ কহিল, “আচ্ছা বল্ব__-বল্ব !*__

আল্নাব উপর হইতে সার্টটা টান্যা লইতে লইতে শিশির কহিল, “বৌদি”, কযেকট! পযসা এনে দাও, টিকিটেব জন্য !”-_-

গৌরী কক্ষান্তরে চলিযা যাইতেছিল, শিশির ডাকিবা কহিল, “ভাল কথ! বৌদি”, দক্ষিণপাঁডার ছেলেগুলি ভারি ধবেছে, তাদেব লাইব্রেবীব জন্য কিছু চাঁষ। তুমিযদিবল কিছু তা*দেব দি !1__কি বলঃ বৌদি ?__»

১৩

গৌরী

গৌরী ছুয়ারের কাছে ফিরিয়। গাড়াইযা হাসিয়া কহিল» “তা? তোমার যা ইচ্ছা! হয দাঁও, আমি আর কি বল্ব ?৮--

"্বা:, আমি যে তাদের বলেছি, বৌদি” যা” বলেন, দেব!”

“তবে পাচ টাকা দিলে হবে?”

"অত ! তা" বেশ, তুমি যা” বলেছ, তাই দাও) ছেলে- গুলির কপাল ভাল !"

গৌরী টাকা কয়েকটি পয়সা আনিয়া শিশিরের হাতে দিতে দিতে কহিল,__

কিছু টাকা তোর কাছে রেখে দিলেই পারিস্‌, শিশির! টিকিটের পয়সাটাও আমার কাছ থেকে চেফে নিবি! কেন আর এমনি নাবালক থাঁকৃবি তুই?” গৌরীর মুখে হাঁসি দেখা ধাইতেছিল, কিন্তু চোখের পাতা জলে ভিজিয়! উঠিয়্াছিল। তরল হাস্তজড়িত-ক্ঠে শিশির কহিল, “আমি চিরকালই যেন তোমার কাছে নাবালক থাকতে পাবি, বৌদি!”

শিশির বাহির হইয়া গেল! গৌরী প্রদীপ গুছাইয়া রাখিয়া, গৃহ-দেবতার বৈকালিক ভোগ সাজাইতে বসিল !

শু

শিশির কর্ম গ্রহণ করার পর হইতেই এক নূতন 'বাহানা, ধরিয়াছিল।

কর্মজীবনের আরম্ভ হইতে আজ পর্য্যন্ত শচীন একটি দিনের জন্বও অবসর পায় নাই? দীরুণ শ্রমে তাহার শরীর ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল, তবু বিরাম নাই, বিশ্রীম নাই, সে খাটিয়াই যাইতেছে! কোন আরাম, স্থুখ, বিশ্রাম সে চাহে নাই। গোরীর সঙ্গ হইতেও সে নিজেকে এতাবৎকাল পর্য্যন্ত একরূপ বিচ্ছিন্নই রাখিয়াছে! এমন অবকাশ কোনও দিনই মিলে নাই যে, কিছু দীর্ঘকালের জন্য পল্নীজীবনের মধ্যে ফিরিয়া! আসিয়া একটা স্বত্তির নিশ্বাস ফেলিবে

পঠদশায় শিশির একবার প্রাণপণ চেষ্টা করিয়া দেখিয়া ছিল। কলিকাঁতার একটি ক্ষুদ্র বামায় গৌরীকে প্রতিট্িত করিয়া, একটি ক্ষুদ্র সংসার রন! করিয়া তুলিতে পারে কিনা, শচীনকে একটু শাস্তি আরামের মধ্যে রাখিতে পারে কিনা।

২৫

গৌরী

কিন্তু শচীনের জন্ভই সে তাহাতে কৃতকাধ্য হয় নাই। পল্লীর বাড়ীটি ছাড়িয়া কোনও দিনই যে গৌরীর বিদেশে যাওয়া হইবে লা, তাহা শিশির নিশ্চিতন্ধপেই বুঝিতে পাঁবিয়াছিল; এবং সেই পঠদশাতেই লে আপনার সমগ্র শক্তিকে বিশ্ববিষ্ভালয়ের পরীক্ষাগুলির মধ্য দিয়া সসম্মীনে উত্তীর্ণ হইয়া যাইবার জন্য নিয়োগ করিয়। বাখিয়াছিল।

আজ সকল সাধনাস্তে বীশাপাণির বরপুজ্রের দিকে পল্পালয়াও যখন একবার অপাঙ্গ-দৃষ্টিতে চাহিলেন, তখন শিশিরের দৃঢ়প্রতিজ্ঞাই হইল যে, সে শচীনকে কলিকাতার কর্- কোলাহলের মধ্য হইতে বিষুক্ত করিয়া লইয়া পল্লীর শান্তজীবনের মধ্যে প্রতিঠিত করিবেই !

শিশির ঘন কোনও মতেই শচীনকে কর্্ত্যাগ করাইতে পাঁরিল না, তখন সে গোরীর কাছে দৃঢ়কঠে ঘোষণা করিয়া বসিল, বে» গ্রীষ্মের ছুটির অগ্রে সেআর স্বীয় কর্মস্থলে ফিরি যাইবে না এবং বাঁড়ীতেই বৌদিপির অঞ্চলের ছায়াব মহা আনন্দে দিনগুলি কাটাইয়া দিবে!

গৌরী তাহাকে অনেক বুঝাইল, ফল হইল না!

শচীন তাহার অনিচ্ছা অমত দুই-ই গৌরীর কাছে

গৌরী

লিখিয়! জানাইল? কিন্তু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিশিরকে কোনও মতেই নিরস্ত করা গেল না !

শিশির এখন আর ছোটটি নহে, সাংসারিক বিষয়ে তাহার মতামতকে এতটা উপেক্ষা এখন আর শচীন করিতে পারে না, যাহাতে শিশিরের অন্তরে কোনও প্রকারে আঘাত লাগিতে পারে! স্থৃতরাং দীর্বকালের বিতর্কের পর শচীনকেই পরাজয় স্বীকার করিতে হইল।

শচীন একেবারেই কর্মমত্যাগ না করিয়া ছয়মাসের অবকাশ গ্রহণ করিয়া বাড়ী আসিল উদ্দেশ্ঠ, সাক্ষাৎ-সন্বন্ধে শিশিরকে একবার ব্লিয়৷ দেখিবে।

সেদিন দুপুবের আহারের সময় শচীন কহিল, “শিশির, আমাকে যে একেবারেই অকর্মণ্য করে রাখতে চাস্‌, এটা কি ভাল হবে? ছ+টা মাস কেটে গেলে, তোর জেদ্‌ যদি তুই ছাড়িস্‌ঃ তা” হ'লে না হয়-”

শিশির কথাটা শুনিয়া, জলের গেলামের মধ্যে হাত ধুইতে ধুইতে নিয়ন্থরে কহিলঃ_-“বাড়ীটাকে একেবারে ছেড়ে দিলে চল্বে না, দাদা! এতকাল বৌদি' বাড়ীর জন্ প্রাণপণ করেছেন, এখন তাঁকে একটু আরামে রাখ তেই হবে,_-”

গৌরী একটা তরকারী লইয়া আসিয়াছিণ, সে বাত্যভাবে

২৭

গৌরী

কহিল, “ও কি শিশির, হাত ধূচ্ছ যে !--আর একটা মাছের তরকারী রয়েছে, দুধ আছে,”

"তাই নাকি ! লক্ষ্য করিনি 1--_অন্মনস্ক শিশির হাসিয! উঠিল গেলাসটা সবাইয়! বাখিয়া গৌরীব মুখের দিকে চাহি! কহিল, ”ও আবার কি এনেছ তুমি? আমারযে খাওঘা হয়ে গেছে !

পতা” তো! বটেই, এগুলি সব তবে পাড়ার লোক ডেকে খাঁওয়াই !--গৌরী শিশিরের পাতের কাছে তরকারীর বাটিটা রাখিয়। দিয়! মু হাসিল।

পকি তোমাদের কথার মীমাংস! হ'ল ? কি স্থির কঙ্গুলে ?” গৌরী কহিল

তোমার বুঝি কাজ নেই, বৌদি? ! আমার যা+ বল্বার তা” তোমাকে একদিনই বলে বেখেছি। একজন বাড়ীতে থাকবেই, হয দাদা) লা! হয় আমি, এখন কা'কে তুমি বাডী থাকৃতে বল”” গৌবীর দিকেই চাহিয়া! শিশির এমন ভাবেই কথাগুলি এক নিশ্বাস বলিয! ফেলিল, যেন শচীন সেখানে উপস্থিতই নাই।

শচীন একবার গৌরীর মুখের দিকে চাহিয়া, একটু হানিয়া ধীরে ধীরে কহিল,-_

২৮

গৌরী

গত! উনি লট রজার $ কহিল, জগ রা হণ ঠা , কথার শর না সু দেখ!” মি না দা খল, শিশিরের | খপ রন সঙ্গে আর তর্ক আছে, শিশির ?” সিরা আম্ছে মোমবার খুলবে আর পাচ বিঃ দিন |”

৮,

রি, পবীক্ষায পাশ করার কিছুদিন পরেই শিশিরের বিবাহ হইয়া গিয়াছিল। হইতে পর্যযস্ত বাঁটাতে মাত্র দুইবার আঙিযাছে। গৌবী আনিতে পাঠাইলেই একটা না৷ একটা আপত্তি তুলিয! লক্ষ্মীর মাত! লক্মীকে পাঠাইতেন না। গৌরী ভাবিত) লক্ষী এখনও ছেলে-মান্ষ/_একটু বড় হইযা! উঠিলেই নিজেব সংসাবেব উপৰ মায়া বসিবে এবং তখন নিজেই উদ্যোগ কবিযা চলিয! আমিবে। কিন্তু গত বৎসর চলিযা যাওযাৰ পবও পর্যন্ত গৌবী লক্ষমীকে আনিবার জন্ত তিনবার লোক পাঠাইযা যখন আনিতে পাবে নাই, তখন সে সত্যই একটু মুস্বিলে পড়িল।

শিশির যখন গ্রীম্মাবকাঁশে বাড়ী আসিল, তখনও গৌবী লক্মীকে আনিতে পাঠাইল। কিন্তু ল্্মী আদিল না। গোৌবী বিশেষ করিযা অনুরোধ জানাইয়া পত্র দিয়াছিল; তাহীতেও কোনও ফল হইল না। তখন গৌরী একেবাবেই হতাশ হই্যা

৩,

গৌরী

পড়িল। এইবাপারটার জন্ত সে শিশিরের কাছে নিতান্তই কুষ্টিত। হইয়! পড়িয়াছিল। একদিন সে সাহদে ভর করিয়া শিশিরকে লক্ষ্মীর পিত্রালয়ে যাইবার জন্ত অন্ুরোধও করিয়াছিল

শিশির তখন মধ্যান্কের আহারের পর শুইয়া পড়িয়া একথানা ইংরাজী নভেলের পৃষ্ঠায় মনঃসংবোঁগ করিবার চেষ্টা করিতেছিল।

গৌরী যখন ভয়ে ভয়ে শিশিরের কাছে দীড়াইয়া কথাটা উত্থাপন করিল, তখন শিশ্লির কোনও উত্তর দিল না, শুধু মুখের উপর হইতে বহিখানি নামাইয৷ একবার গৌরীর মুখের দিকে চাহিল ) তাহার দৃষ্টিতে একটা বিরক্তির নুম্পষ্ট আভাম জাগিয়! উঠিযাছিল। কোনও কথা না কহিয়া শিশির পরক্ষণেই বহি তুলিয়া লইল। গৌরী মৃুক্ঠে কহিল, _্লক্গী তাইটি আমার 1”__

শিশির বহি ফেলিয়া দিয়া উঠিয়া বসিল। তীব্র-কণ্ঠে কহিল, "তুমি আস্তে লিখেছ, সেইটেই যথেই নয় কি বৌদি ?”-_

গৌরী আজ বিদ্রোছকে উপেক্ষা করিবার জন্ত প্রস্তুত হইয়াই আলিয়াছিল; ধীরে ধীরে কহিল, “আমি একবার

৩০

গৌরী

লিখেছি কি না লিখেছি, তা” তোমার দেখবার দবকার নেই ভাই; আমি তোমাকে অনুরোধ কচ্ছি, তুমি? লক্ষ্মী ভাই আমাব, একবারটি”__*

_-দসে হবে না, বৌদি”! যাঁর তোমার চিঠিকে উপেক্ষা কমূতে পেরেছে, তাদের বাড়ীতে যাওয়া আমাব কর্শ নয”--

_প্উপেক্ষা করবে কেন? অন্রবিধা ছিল, পাঠাষনি সব সময়েই যে সকলেব স্থুবিধা থাকৃতে হবে, এমন কথ! নেই ত!”__

তীত্রন্বরে কহিল, ”বৌদি”-_

গৌরী শিশিরের মুখেব দিকে চকিত-ৃষ্টিতে চাছিল।

শিশির ভ্রুত অস্থির-কণ্ঠে বলিযা! উঠিল, "এই এক বছরেব মধ্যে তুমি ক'বাব 'আন্তে লোক পাঠিয়েছ, তা” কি আমি জানি না, বৌদি” ?”

--দকই, ক'বার আমি লোক পাঠিযেছি? কে তোমাকে বলে সব কথ। ?”__নিমজ্জমান ব্যক্তি যেমন একট! সামান্য আশ্রয়কেও আকড়িয! ধরিবার জন্য একবার শেষ চেষ্টা করিযা দেখে, গৌরীও তেমনি একবার শেষ চেষ্টা করিযা দেখিবাব অন্ত কথাটা বলিল। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে তাহার মুখখানি যে

৩২

গৌরী

কতখানি মান হইযা গিয়াছে এব" চক্ষুব দৃষ্টি বে কতটা উৎসাঁতঙ্কীন হুইযা! পড়িযাছে, ভাহা গৌনী নিজেও যেন কতকটা উপঙ্লব্ধি কবিতে পারিতেছিল ! শিশিল তেমনি 'অস্থিবভাঁবে কহিল, “কাউকে বল্হে হবে কেন, বৌদি? "আমি নিজেই সব খেজ বাখি |৮--

গৌবীব মাব কোনও উত্তব ছিল না। তবু সে হতাশভাবে কিল, “কেন, সংসাঁবের এমন সব তুচ্ছ ব্যাপাবেবও খোজ তুমি অত কবে বাখ তে যাও কেন?”

"স্সাবেব কিছুবই "আমি খোজ বাধতে চাইনে, কিন্ক ঘে ব্যাপাবগুলিতে তোমাকে আঘাত কে এবং উপেক্ষা জানায, তা” ভুমি তুচ্ছ মনে কঘতে পাব বৌদি” কিন্ধ আনি সেই গুলিকেই সব চেবে শুক বলে মনে কবি”--

গৌধী উচ্চকে কহিল, «এ তোমাব ব্ড বাডাবাডি ।__ তিলকে ভাল কবে হোলাটা ঠিক নম দুর থেকে কে কাব অস্থবিধা ঠিক বুঝতে পাবে? তুমি নিজে একবাঁৰ গেলেই সব গোল কেটে বাবে ,_-সব না! জেনে শুনেই কাক উপব অবিচার কনাটা ঠিক নস,”-_-

গৌবীব কথা শেষ হইবাব পূর্বেই শিশিব কহিল, "তোমার বিচাব নিষে তুমিই থাক »_ ইচ্ছা! হয, আবার চিত্ত

৩৩

গৌরী

লেখ, লোক পাঁঠাও,__-আমি। যেতে পায়্‌ব না, ঠিক জেনে রাখ ।'

আল্নার উপর হইতে একটা জাম! টানিয়া লইতে লইতে শিশির কহিল১__ণকে তোমাঁব সঙ্গে বসে বসে ঝগড়া কয়্কে বাপু, ভোমার যা খুসি কর, আমি বেরিয়ে পড় জুম 1”

৩৪

৯৬

পূজার ছুটিতে শিশিব বাড়ী আসিযাছে।

চতুর্ধীর দিন সকাল বেলা শিশির নিজের ঘরট| গুছাইতে- ছিল। গৌরী আসিয়। কহিল, __«ও-ঘরে দুটো! টেবিল রয়েছে, তুমি একটা এ-ঘরে এনে রাখ; কাগঞ্পত্র বইটই গুলি রাখতে শ্বিধা হবে|”

চাকরট| বাহিরে বাইতেছিল, গৌরী তাহাকে টেবিল আনিযা দিতে বলিয়া কার্য্যান্তরে চলিয়া! গেল। চাঁকর টেবিল আনিয! দিল। ড্র্যারের ভিতব কিছু কাগজ কযেকথানা চিঠিপত্র ছিল; শিশির দে গুলিকে বাহির করিয়া আঁনিল। কোন আবশ্ববীয কাগজ আছে কিনা একবার নাড়িয়া দেখিল। কাগজগুলি একটা চুবড়িব মধ্যে ফেলিযা দিবার সমযে একখানা চিঠির উপর শিশিরের দৃষ্টি পড়িল। চিঠির উপৰ শচীনের নাম লিখিত ছিল। ডাঁকঘরের মোহরটা| পরীক্ষা কবিযা দেখিল) সে যাহা সদেহ করিযাছে, তাহাই বটে। চিঠি লঙ্ষমীর পিত্রীলয় হইতে আদিশাঁছে।

৩৫

গৌরী

খামখানা হীতে করিযা শিশির একটু ভাবিল, তার পর খামের ভিতর হইতে চিঠি বাঁহির করিয়! পড়িল।

চিঠি পড়িতে পড়িতে শিশিরের দুইহাত মুষ্টিবন্ধ হইয়া আমিল, ললাটরেখ! গভীর হইল, অধর দংশন করিতে করিতে শিশির তীব্রবেগে উঠিয়া দীড়াইল |

গৌরী পাকগৃহের মধ্যে কি করিতেছিল, শিশির চঞ্চলপদে দুয়ারের কাছে যাইয়া! ঈ্াঁড়াইল, ভিতরের দিকে একবার চাহিযা কহিল, “বৌদি, আমি মীরপুর ঘাব,__এখনি,_-”

শিশিরের তীব্র কথন্বব শুনিয়া গৌরী ফিরিযা চাহিল 3 শিশিরের কুড্রমত্ি দেখিয়া চকিতভাবে কহিল, “কি হবেছে শিশিরঃ__মুখ চোখ অমন দেখাচ্ছে কেন তোমার ?৮--

"কিছু হযনি, আমি মীন্পুর ঘা, তাই বল্তে এসেছি আমি আজই যাব,_এথনি বাব!”

“এখনি যাবে 1-পাক হযনিঃ না খেয়ে কেমন করে যাবে ?-_-এখনি হঠাৎ এমন ব্যস্ত হয়ে উঠলে কেন শিশির 1--”

প্ধাওয়া আমার হবে না, আমি নস্টার গাড়ীই ধর্ব,__ তুমি দাদাকে বলো, তার ফির্বার দেরী আছে। তুমি কিছু টাকা আমায় দাও”__

গৌরীর চিত্ত একটা "অনির্দিষ্ট আশঙ্কায় পীড়িত হইতেছিল,

৩৬

গৌরী

সে শিশিরের কাঁছে সরিষা আসি স্লেহ-তরলকণ্ঠে কহিল *কি হযেছে শিশির ?--তোমাব মুখ দেখে আমার ভাল বোধ হচ্ছে না,_কারু অন্থখ বিস্থ করেনি ?”

"হবে কি?--কিছু হযনি! পুজাব দিনে ঘরের বৌটাকে কি একবার আন্তে বলতেও নেই, তোমরা বল্বে না কাজেই আমাব নিজেবই যেতে হবে|»

শিশিবের কথা শ্ুনিবা গৌবী বুঝিল, কিছু একটা গুরুতর ব্যাপাব ঘটিযাছে, যাহাতে হঠাৎ তীব্র আঘাত পাইয!ই শিশির অত্যন্ত উত্তেজিত হইঘা উঠিযাঁছে ; এবং সেই "মাঁঘাতিটা থে শিশিন লক্ষ্মীর পিত্রালমেব দিক হইতেই পাইযাছে, তাহাও গৌবাীব বুঝিতে বাকী বহিল না। শিশিবেব হাতখান! নিজের হাতে মধ্যে টানিযা লইতে লইতে উদ্দেগপূর্ণকণ্ঠে গৌবী কহিল, “আমাৰ মাথা খাস্‌ শিশির কি হবেছে বল্‌।৮--

গৌবীব ন্নেহতপ্ত প্রকোষ্ঠ মধ্যে শিশিবেব বলিষ্ঠ হাতখানি একটি ক্ষুদ্র শিশুব ভাঁতখানির মন্ই কাপিতেছিল। সেই শ্নেহস্পর্শ শিশিবকে অভিভ্ভৃত কবিষ! দিতেছিল, তাহার বিশাল চক্ষু দুইটা অশ্রুতে তরিষ। উঠিল ;_-সে হাত ছাঁড়াইযা নিতে নিতে আর্্রকম্পিত কণ্ঠে কহিল,_ণ“কেন তোমরা এই একঘব কুটুদ্থের কাছে এমন করে বার বার অপমান ভোগ করছ?

৩৭

গৌরী

আমার কাছেও মে অপমান গোপন কর কেন? আমিকি এতই দূরে সরে গিয়েছি? এই অপমান লুকিয়ে লুকিয়ে সহা করেঃ কেন তোমরা আমাকে এমন কুষ্তিত করে তুল্ছ, বৌদি” ?”

গৌরী বিশ্মিত কণ্ঠে কহিল, “কোথায় আমরা অপমান ভোগ করে তোর কাঁছেও লুকিযে রেখেছি, শিশির ? তুই কি যে বলিস তা”ত”-_

_ "মোটেই বুঝতে পারছ না, কেমন, এই ত?”- হঠাৎ শিশির উগ্র হইয়া উঠিয়া, গৌবীর হাতের মধ্য হইতে হাত টানিয়! লইয়া কহিল, “তা” বেশ, না ধুঝে থাক, না বুঝেছ,__ তুমি টাকা এনে দাও 1”--

গৌরী শিশিবের প্ররূতি ভাল কবিযাঁই জানিত। সে যখন যাঁওয়াই সঙ্কল্প করিয়াছে, তখন তাহাকে 'আঁর বাধ! দিয়া যে কোনও লাভই নাই, তাহা সে বেশ জানিত। আর কোনও কথা বলিয়া! গৌরী কিছু টাকা আনিয়া দিল, শিশির টাকা নিয়া নিজের ঘরে চলিয়! গেল

মুহূর্ত পরে গৌরী একটা রেকাবীতে কিছু খাবার এক গেলাম জল নিয়া শিশিরের ঘরে গিয়৷ দেখিল, শিশির চেয়ারের উপর বসিয়া পড়িয়া, সম্মুখের টেবিলটার উপরেই মাথাটি অবসন্ন ভাবে নীচু করিয়া রাখিয়া চক্ষু মুদ্রিত করিয়! রহিয়াছে

৩৮

গৌরী

গৌরীর পায়ের শব্দ পাইয়া শিশির মাথা তুলিয়া! চাহিল। ব্যথিত দৃষ্টিতে গৌরী চাহিয়৷ দেখিল, তখনও শিশিরের চক্ষের অশ্রুবিন্দ গুকায় নাই!

কোনও কথা না কহিয়া খাবারের রেকাবীথানা হাতে করিয়া গৌরী টেবিলের পার্খে দীড়াইয়া রহিল

শিশির ভঠাৎ ভঠিযা দা'ড়াইযা কহিল, “আমি বেকি হয়ে ঘাচ্ছি, তা* মানি নিলেই ভাল ক'রে বুঝতে পাচ্ছিনা, _তোমাকে বাথ! দিয়ে আমি কোথ।য় যাব, বৌদি” ?__আঁঙি বাব না 1”__

গৌবীব স্বেপূর্ণ অন্তধ শিশিবের জন্য আশঙ্কায় উন্খ হইগ্না উঠিতেছিল।

শিশিব ঘে বিবাভিত জীবনে সুখী হইতে পারে নাই, সে জন্ঠ গরীব বুকের মধ্যে একটা তীর কুগ্ঠাপূর্ণ বেদনা নিশিদিন নিবিড় হইযাই ছিল

বিবাহের পূর্ব শিশির একদিন বলিয়াছিল, বড় লোকের ঘরের মেয়ে না এনে, বড় গৃহস্থ ঘব্ব মেয়ে আন”? ঘে তোমার মর্যাদা বুঝবে, বৌদি” !--কথাটা গৌরী একটি দিনের জন্তও ভূলিতে পারে নাই৷

ধনীর জামাত! হইলে শিশির 'আদর যত্ব পাইবে, তাহাই মনে করিয়া, যখন মীব্রপুৰের জমীদারের একমাত্র দুহিতার

৩৯

গৌরী

সহিত বিবাহ প্রস্তাব হইল, তখন গৌরী কত আগ্রহেই স্স্ধ স্থির করিয়াছিল! বৌদিদির আগ্রহ দেখিযা শিশির আর কোনও কথাই বলে নাই!

গৌরীর কেবলি মনে হইত শিশিবের এই অশাস্তি অন্থথেব সে-ই একমাত্র কারণ! সমস্ত অপবাঁধেব বোঝাটা নিজের উপব চাপাইযা দিবাও সে ৰথন কোনও মতেই শাস্তি পাইত না, তখনই সে নীরপুরে পত্র লিখিতে বসিত ; লোকেব পর লোক পাঠাইত ! কিন্ত মীরপুবের জমীদা'রগৃহিণী নাঁনা- প্রকার আপত্তিব সৃষ্টিই কবিয! তুলিতেন, লঙ্ষ্মীকে কৰে থে সঠিক পাঠাইতে পারিবেন, তাহা কোনও দিনই নির্দিষ্ট কবিষা বলিয! দিতেন না।

গৌবীব চিঠিতে যখন কোনও কাজই হইল না, তখন শচীন লক্মীব পিতার নিকট পত্র লিখিল। শচীন 'আশা করিয়াছিল, লক্ষ্মীর পিতা সত্যশঙ্কর চৌধুবী ঘাহা হয একটা সঙ্গত ব্যবস্থাই করিবেন! কিন্তু সত্যশঙ্কব বাবু শচীনেব চিঠিব উত্তরে এমন একথানি চিঠি লিখিলেন, যে চিঠি শচীন সাহস করিয। শিশিরকে দেখাইতে পাবিলই না, পরন্ধ সে যে কি. করিবে তাহাও স্থির করিতে না পারিয! উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল

আজ ড্রয়ারের কাগজপত্রের মধ্যে শিশির হঠাৎ সেই

গৌরী

চিঠিথানি পাইয়া বসিল। চিঠিখানির মধ্যে এমন কয়েকটি কথা ছিল, যাহা লিখিয়া সত্যশঙ্গর বাবু অমার্জনীয় অপরাধ করিয়াছেন বলিয়াই শিশিরের মনে হইতেছিল কিন্ধ দাঁদাঁকে এবং বৌদিদিকে কি প্রকারে পুনঃ পুনঃ এইরূপ অপমান হইতে রক্ষা করিবে, তাহাই আজ শিশিরেব কাছে সর্বাপেক্ষা চিন্তার বিবয হইয| পড়িয়াছিল

গৌরী খাবারের রেকাঁবীখান! শিশিরের সম্মুখে রাখিয়া মৃহুন্ববে কহিল, পশিশির কিছু খেষে নে।” তারপর একটু চুপ করিযা থাঁকিয়া ধীরে ধীরে কহিল “আমি সব কথা বুঝতে পেরেছি, তুই বোধ হম সেই চিঠিটাই পেয়েছিস্‌, দ্রয়ারেন মধ্যেই আমি তা” রেখেছিলাম আমি এতদিন তোকে মীরপুর যেতে বলেছি, তুই যাঁসনি,-আজ তোকে আমি কিছুতেই বেতে দিতাম না; কিস্ক আমি নিশ্চিত বুঝতে পেরেছি, আর উপেক্ষা করা ঠিক হচ্ছেনা শিশির আজ আমি তোকে সত্যিই মীরপুব যেতে দেব, যদি তুই একটা কথা আমার কাছে স্বীকার করে যেতে পারিস্‌ 1৮

শিশির খাবার খাইতে থাইতে মুখ তুলিয়া গৌরীর মুখের দিকে চাঁহিঘা কভিল,--“কি” ?

_-"তুই আমাকে বল্‌, যে, তাঁরা ধে রকম বাবহারই করুক

১১

গৌবী

না কেন, তুই তাতে কোনও উত্তরই করবিনে,_-এবং সেখানে কোন অনর্থ ঘটাঁধিনে ; শুধু সহা কবেই চলে আস্বি 1”

গৌবী তাহার শ্লেহ-ব্যাকুল দৃষ্টি শিশিবেব মুখের উপর স্থাপন কবিযি। অস্থিবভাঁবে উত্তবেব জন্ত অপেক্ষা কবিতে লাগিল !

শিশির কহিল, আমি কোনদিনই মীবপুর যেতাম না, বৌদি”! কিন্ত বাবা আমাব দাদাীকেও অপমান কর্তে সাহস কবে, তাদেব আমি কোনও মতে ক্ষমা কষতে পাঁবিনা অন্তেব সংসাবেব ব্যবন্থীবৰ উপব অনাহুতভাবে কর্তৃত্ব কর্তে আসা যে একট! অমাজ্জনীয 'অপবাধ, সে জ্ঞানটাও বদি তাদের না থাকে, তা হলে?”

গোৌবী বাধা দিঘা কহিল,_“না, তুমি যদি সেখানে গিষে অনর্থ ঘটাও, বিবাদেব শুচনাই কক তা হলে মেয়ে কাজ নাই তোমার»__

--“নী, ,বৌদি, আমাকে এবার যেতেই হবে; সকল অপমান 'অনর্থকে সৃষ্টি কবে তোল্বাব জন্য ঘে সেখানে বধেছে, সে কোনও দিনই বাডীতে আসবাব ইচ্ছা বাথে কি না, শুধু সেইটুকুই আনি জ্ষেনে আসতে চাই !_-তবে তোমার কথাই থাকবে, আমি সবই সহা কবে 'আস্ব, তুমি যা, বল্বে তাই কয়ুব, এই বলছি!”

৪২

গন

শিশির মীরপুর আসিয়াছে

পঞ্চমীর সন্ধ্যা) শরতেব নির্মল আকাশে শশাঙ্কের হাসি ফুটিযাছে। বিশ্ব-্ষ্টিকে ওতপ্রোতভাবে আাবেটন করিয়া যেন একটি বিবাঁট “& অদৃশ্যভাবে রহিয়াছে; ক্দীণ, বক্র শশাঙ্ক যেন তাহীবই চন্্রবিনদুটী লোঁকলোচনের কাছে প্রত্যক্ষ হইয়া উতিযাছে।

দিতলের ছোট একটি কক্ষ; কক্ষটি স্থুমঞ্জিত; পৃবের দক্ষিণের জানালাগুলি উন্মুক্ত রহিয়াছে দক্ষিণের দিকে একটা খোলা ঝুলবাবনদা1; বেলিংএর থামগুলির মাথায় মাঁথাঁয বিচির টীনামাটাব টব রহিয়াছে; টবে টবে ফুলগাছ, পাতাবাহারেব গাই; ফুলগাছে ফুল ফুটিয়াছে ; একটা মৃদু পবনপ্রবাহ ফুলেব গন্ধ গাযে মাথিযা কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করিতেছিল ) গঙ্গ বিলাইবার জন্ত, কক্ষমধ্যে কে আছে, যেন তাহীকেই খু'ক্লিতেছিল। কক্ষমধ্যে আর কেছ ছিল না, ুধু-_ শিশির একটা টেবিলের কাছে চুপ করিয়া বসিয়া রহ্যাছে !

৪৩

গৌরী

বাতাস তাহাব্‌ উড়ানীথানি একটু উড়্াইযা, কুঞ্চিত ললাটদেশ একটু স্পশ কবিষা, কাণেব কাঁছেব চুলগুলি একটু নাঁড়িযা দিযাঃ বহিয! গেল

শিশিবেব কোনও দিকেই লক্ষ্য ছিল না। তাহার ললাট "একটু কুঞ্চিত, দৃষ্টি লক্ষ্যহীন ; হাত ছুইথানি মুষ্টিব্ধ। সেষে কিছু ভাবিতেছে, তাহা তাহার মুখেব দিকে চাহিলেই বুঝা যায

এমন সমযে, উত্তবের দিকৃকাব দুযাব খুলিষা কেহ সন্তর্পণে কক্ষমধ্যে প্রবেশ কবিল। যে আসিল, সে লক্ষ্মী লক্ষ্মী কক্ষে মধ্যে প্রবেশ করিযাই দুযার বন্ধ করিয! দিল, এবং ধীবে ধীরে টেবিলের পাশে আসিলা দাডাইল |

দক্ষিণের খোলা জানালার পথে হঠাৎ একট! দম্কা বাতাস প্রবেশ করিযা টেবিলে উপবকার শ্সিপ্ধ আলোট'কে মুহুর্তের জন্য উজ্জ্বল করিষা তুলিল, এবং লক্ষ্মীব মাথাব অনভ্যন্ত গনটাকে একটু সরাইধা দিয়! গেল |

শিশিব ভীব্রদৃষ্টিতে লক্ষ্মীর মুখেব দিকে একবাব চাহিল, ঠিক তখনই একটু মৃছু হাসিষা লক্ষ্মী কহিল, “তবু বে একবাবটি এলে 1!”

শিশির দেখিল, লক্মীর উজ্জল রূপ উজ্জলতর হুইযাঁছে দুই বসব শিশির লক্ষ্মীকে দেখে নাই ! সুদীর্ঘ দুইটি বসব,

৪8৪

গৌরী

বিশ্বকর্পীর মতই নিপুণহত্তে একটি বালিকার লীলাচঞ্চল দেহলতার উপর দিয়া তরুণীর সকল সৌন্দর্্যসম্পদ পুষ্পিত করিয়া তুলিয়াছে !

শিশির দেখিল, লক্ষ্মীর কালে চক্ষের দৃষ্টি আরও নিবিড় হইযাছে ) ঈষৎ বক্র রসপুট মধরপুট সোহাঁগের অপেক্ষায়ই যেন উদ্যত হইযা। রহিয়াছে! কপোঁলেব বর্ণনষমাঁর অন্তরালে ভ্রুতঃ উচ্ছ্বসিত শোণিত সঞ্চার ঘেন ধরা পড়িতেছিল ! কুঞ্চিত কুস্তলগুচ্ছ রুষ্ণসর্পশিশ্বর মতই মুখখানির পাশে পাশে লতাইমা নামিদা ঈষৎ ছুলিতেছিল। পৃষ্ঠদেশ ছাপাইয়া অংসে, উরসে, গুচ্ছেব পর গুচ্ছ কুম্থল অযস্থবিন্তস্ত হইয়া শোভা পাইতেছিল। কালো চুলের মধ্যপিয়া, নীলাম্বরীর আড়াল পিয়া, কর্ণের স্ুবর্ণভূবণ মৃহু আলোকসম্পাতে জলিতেছিলঃ মন্দানিল সংস্পর্শে রহিযা রহিয়। দুলিতেছিল !

শিশিবকে নীবৰ থাকিতে দেখিযা মৃদুষ্বরে লক্ষ্মী কহিল, “কি ভাবছ ?”

শিশির একটু চকিতভাবে আবার লক্ষ্মীর মুখের দিকে চাহিল, 'অন্তমনস্কভাবে কহিলঃ “ভাবছি, সত্যি তুমি কতটাই বদলে গেছ

লক্ষ্মী গর্বিতা, লক্ষী মুখরা, তবু তাহার যেন একটু লক্জা

৪৫

গৌরী

করিতেছিল। সে একবার তাহার দৃষ্টি নত করিয়া লইল, তারপর একবার চকিতে স্বামীর মুখের দিকে চাহিল। শিশির তেমনই অন্যমনস্ক, টেবিলের উপরের আলোটার দিকেই এক দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিয়াছে

লক্ষ্মী ধীরে ধীরে কহিল; “কই, আমি কিছুই বদলে যাইনি !”

_-প্যদি ন৷ বদলে যেতে, বৌধ হয় ভাল হ'ত, লক্ষ্মী !”

লক্ষ্মী স্বামীর কথা ভাল করিয়! বুঝিল না, তবু কহিল? “না, আমি বদ্লাই নি !” '

শিশির একবার একটু নড়িয়া চেয়ারের উপর ঠিক হইযা বপিল, বিস্ষারিত দৃষ্টিতে লক্ষ্মীর মুখের দিকে চাহিয়া! ডাকিল-_ পাী,এ-_-

লক্ষ্মী এমন একটা! ম্থম্পঃ আহ্বানের জন্য প্রস্তত ছিল না, একটু চকিতভাবে স্বামীর মুখের দিকে চাঁহিযা কহিল, “কি?”

লক্ষ্মী চাঁহিযা দেখিল, শিশিরের দৃষ্টি তীব্র, সে যেন বিচারকের কঠোর পরুষ-ৃষ্টি ? লক্ষ্মী ছুই পা পিছাইযা গিযা, আর একবার শ্বামীর মুখের দিকে ভাল করিয। চাহিল, তারপর ধীরে ধীরে কহিল, «কি বল্‌্বে ?”

-_প্লিক্ষীঃ তোমাকে ঘেতেই হবে”আজ, এখনি যেতে

৪৬

গৌরী

হবে! দেখছ, আমি এখন পর্য্যস্ত কাপড় জামাও ছাড়নি ; তোমার কাছ থেকে একটা শেষ কথা পেতে চাই,৮-_

“মা বাবার সঙ্গে কি কথ! হ'ল?”

এতটা সহজ সুরে লক্ষ্মী উত্তর দিল, যে শিশির তাহা মোটেই পছন্দ করিতে পারিল না। ভ্রকুঞ্চিত করিয়া সে তীত্রক্ঠে কহিল»__“তা, তুমি না জান্বার কোনও কারণ আছে বলে মনে করি না) তবু যখন জিজ্ঞাসা করছ, শোন! কাল পূজা, তারা তোমাকে আজ যেতে দেবেন না আর আমাদের গ্রামের জল হাওয়া নাকি তোমার সা হাব না। তাই যতদিন আমি তোমার থাক্‌বার উপযুক্ত বন্দোবস্ত আমার কন্মস্থলেই না করছি, ততদিন তোমাকে এখানেই রাখতে চীন্।-_-বোধহয সেইটেই সব চেমে বড় কথা; পূজার আপন্তিটা কিছু নয বলেই মান হ'ল ।”-__-

লক্ষ্মীর মুখের হাসি মন্তহিত হইল; ধীরে ধীরে কহিল, “তা তুমি কি বল্লে ?”--

“আমি নিযে যতই চেয়েছি, বেশী আর কি বল্ব, তাদের সেই একই কথা ।”

"একবার ভাল করে বলে দেখ”__-

শিশির অস্থিরভাবে কছিল, “না তা আর হয় না।

৪৭

গৌরী

এখানে আমি এসেছি, তোমাকে নিঘে যেতেই,_তুমি যাবে কি না আমি শুন্তে চাচ্ছি!”__শিশিবেব কণন্বব ক্রমেই উগ্র হইয৷ উঠিতেছিল

কুক্ষণে শিশিব মীরপুর আসিযাছিল, আবও অশুভ মুহূর্তে লক্বীর সঙ্গে তাহাব সাক্ষাৎ হইযাছিল। বিশেষ চিন্তা না কবিযা ল্্ী কহিল,-"মা বাবার অমতে জোঁব কবে যাওয|টা-----৮

লক্ষ্মীর মুখেব কথা শেষ হওয়া পূর্বেই 'অধীব শিশিব তীব্রকণ্ঠে বলিযা উঠিল, ০্তা” হলে চিবদ্িনই ম1 বাবা কাছে থাকবাব সৌভাগ্য তোমার হ-কৃ*__

চেযার্টা সরাইযা শিশির তীব্রবেগে উঠিযা দাড়াইল !

লক্ষ্মীর ছুই চক্ষু মুহূর্তের জন্য দীত্ধ হইঘা উঠিল, সে একবাব পূর্ণ দৃষ্টিতে স্বামীর মুখের দিকে চাহি্যা কহিল, “আমা সৌভাগ্যের "কথ! বলিনিঃ; একবার ভাল কৰে মা বাবাকে বললে তারা

সপন সে আমি আর পারব না; আমাব দাদার বৌদিদির চিঠিকে ধারা অপমান কন্বুতে পেরেছেন, আমি তাদের কাছে যে পর্য্যন্ত বলেছি, সেই যথে্, তার বেশী,__

"তাৰ বেনী বললে অপমান কিছু নেই ?*

৪9৮

গৌরী

«অপমান | সাঃ অপমান বই কি! নিজেব আশ্ম-সন্মান জ্ঞানকে অপমান কবাঁই হবে!”

লক্ষ্মী দক্ষিণ কবাঙ্গুলিগুলি মুক্ত করিয। বাম পাঁণিতলের শিথিল মুষ্টিমধ্যে চাঁপিযা ধবিয মুছুম্ববে কহিন॥ “এমন 1”

__হাঁ, এমনি বটে 1”

বিশ্বিত, ক্দ্ধ। শিশিব ভাঁবিল, এই লক্ষ্মী! এই নারীকে লইযাই তাহা সাবাজীবন সতিবাহন কবিতে হইবে। এই ধনীব দ্ুলালী, বিলাস-লাপিতা নাবী, পল্লীর শান্ত বৈচিত্্য- বিহীন গাহস্থ্য-চীবনেৰ মধ্যে কোঁথাষ ভাহাঁব আসন !

লক্ষমীন উজ্জ্বল কূপ, বিচিত্র ভূষা, কক্ষেব ক্লিপ্ধ আলোক- লেখা, পুষ্পগন্দবাহী উদ্দাম-পবন প্রবান্ঃ শিশিবের চতুর্দিকে যেন একটা তীর উপহাস উপেক্ষাঁৰ বচন কবি তুলিতেছিল

শিশিব ছুই পা সবিযা আসিতে আসিতে কহিল, "লক্ষ্মী, তুমি যখন তর্কেব স্বষ্্ট কবে তুলেছ। তখন তুমি যে যাবে না, তা” আমি বেশ বুঝতে পেবেছি! সে কথাটা তোমাৰ মুখ দিয়েই শুন্তে 'মামাব সাধ নেই; তোমাকে বল্তে না দিযে তোমাব ভবিষ্ততেব যাওযাব পথটা আমি খোলা বাঁখলাম; কাবণ আমি বদিই তোমাকে ক্ষমা কবতে না পারি, তোমাব

৪৯

গৌরী

বাপ মা ধাদের অপমান কবেছেন, তারা তোমাকে, যে অবস্থাই তুমি যাঁও না কেন? ববণ করে ঘবে তুলে নেবেন,__ আমি এখনি চল্লাম, আশা কবি তুমি তোমাব বাপ মাব ছুলালী হযে সুখেই থাক্বে 1”

লক্ষ্মী ভয পাইল , কহিলঃ "আমাৰ সব কথাটাই শোন, তারপর বা” হয বিচাব কবে”__

ভাল কবিয| লক্ষ্মীর কথাগুলি শিশিবেব উত্তেজিত মস্তিষ্ষেব মধ্যে প্রবেশও কবিল না। শিশিব অস্থিব পদে ছুযারেব দিকে অগ্রসব হইযা গেল। লক্ষী প্রঘাদ গণিয! দুযাবেব দিকে ছুটিযা গেল, ছুযাঁৰ বন্ধ কবিবাব পূর্েই শিশিব কক্ষ হইতে নির্গত হইয়া গেল

লক্ষ্মী সেই 'অনুজ্জল আলোকিত কক্ষেব মধ্যে অনেকক্ষণ মূঢ়েব মতই ভাইবা বহিল।__

এমন সমমে চঞ্চলপদে কক্মমধ্যে গ্রবেশ কবিধা বিনোদিনী কহিল, “ঠাকুবঝি) শিশির বাবু কোথায় ?--মা ডেকেছেন তাকে!

লক্ষ্মী তখনও নিজেকে ভাল কবিষা সাম্লাইতে পারে নাই তাহার গীবববক্ষ তখনও গুকশ্বাসে কম্পিত হইতেছিল দীর্ধ চক্ষুব প্রান্তভীগ তখনও "শ্রসজল ছিল।

লক্ষী কোনও উত্তর দিল না দেখিমা বিনোদিনী কাছে আসিয! তাহা গা ঠেলিযা। ডাঁকিল। “কি ল! হযেছে কি তোদেব? -জামাইবাবু কোথায

কতকাল পবে স্বামী সম্ভাষণ কবিতে আসিয! লক্ষ্মী যে তীৰ উপেন্ন! লাভ কবিযাছে, তাহা তাহাব অন্তব দেশকে পীড়িত কবিযা! তুলিতেছিল) একটা দীরুণ লজ্জা যেন তাহাকে বে্টন কবিযা ধবিতেছিল। স্বামী বে এমন কবিষা চলিয! যাইধেন। তাহা! সে একবারটি মনেও করিতে পারে নাই। বিনৌধিনী আসিয! যখন তাহাকে ডাঁকিল, তখন লজ্জায়,

৫১

গৌরী

দ্বণায, অপমানে লক্ষ্মীর মাঁটাব সঙ্গে মিশিষা যাইতে ইচ্ছা হইতেছিল। যেন তাহারই অপরাধ, যেন তাহারই সঙ্গে ঝগড়া কবিযা শিশিব চলিযা গেল; এবং সে যে কোথা গেল, এবং কেন গেল, তাহার জবাব লক্ষ্মীকেই প্রত্যেকের কাছে দিতে হইবে!

শিশির আসিবার কিছু পরেই, লক্ষমীব যাওয়! স্বন্ধে যে উত্তব সে সত্যশক্কব বাবুর কাছে পাইল, তাহাতেই শিশিব ভিতরে ভিতবে অত্যন্ত উগ্র হইয উঠিযাছিল ; কিন্তু গৌবীর কাছে সত্যে আবদ্ধ ছিল বলিষা, সে নম্রভাবে শুধু শুনিযাই গেল, কোনও মতামত প্রকাশ করিল না

সত্যশক্কর মনে করিলেন, জামাত! তাহার যুক্তির মর্শ সম্যক উপলব্ধি কবিতে পাঁরিযাঁছেন, তাই বিরুদ্ধ মত প্রকাশ করিলেন না।

কিন্তু শান্তদর্শন তিস্ুভিয়সেব অন্তবমধ্যে যে দারুণ জাল। গুমরিতেছিল, তাহা সত্যশঙ্কব বিন্দুমাত্রও অন্থমান করিতে পারিলেন না।

লক্ষ্মীর মাত! বিদ্ধাবাসিনী যখন কুশল প্রশ্নীস্তে ঠিক একই ভাবে লক্ষ্মীর যাঁওয়ার প্রতিবন্ধকতা] বুঝাইয়া' দিলেন, তখন শিশিরের ধৈর্ধ্চ্যুতি ঘটিতেছিল ) কিন্ত সে ঘাড় গুজিয়া শুধু

৫.

গৌরী

জামার আতন্তিনটা লইয়াই ব্যস্ত হইয়া উঠিল এবং একবার মাথা তুলিয়া বলিয়! ফেলিল,_-“দাঁদা বৌদি বলে দিয়েছেন, নিয়ে যেতে, নিয়ে যেতেই হবে! আশা করি আপনারা তারই বন্দোবস্ত করে দেবেন; নইলে আমি আজই চলে যাচ্ছি, যথন স্থবিধা হয় পাঠাবেন ।৮--

কথার পরও যখন তিনি শিশিরের সঙ্গে গল্লী গ্রামের অস্বাস্থ্যকর জলবাধু সম্বন্ধে তীব্র আলোচনা করিতে বসিয়! গেলেন, তখন শিশির আর কোনও কথাই কহিল না।

এমন সময়ে দাসী আসিয়া! কহিল, “মা, জামাইবাবুকে বৌদিদি ভিতরে ডেকেছেন,”__

বিদ্ধ্যবাসিনী কহিলেন, প্যাঁও বাবা, বিনোদ বুঝি তোমাকে ভাকৃছে !”__

দাসীর প্রদশিত কক্ষমধ্যে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিয়াই শিশির লক্ষ্মীর দেখা পাইল।

তারপর ভিন্ভিয়সের চুড়ার কাছে একবার তাহার অস্তরস্থিত দারুণ জালার অত্যুজ্জল শিখ! মুহূর্তের জন্য দেখা গেল, পর মুহূর্তেই শিশির কক্ষ হইতে বাহির হইয়া আসিল!

ব্যাপারটা যাহা! ঘটিয়া গেল, তাহাতে শিশিরকে বিশেষ দোষী করা চলে না। ধনীর একমাত্র ছুহিতাকে বিবাহ

৫৩

গৌরী

করিযাছে বলিয়াই, শিশিব যে তাহার আত্মসম্মীন জ্ঞানকে কোনও অংশে এতটুকুও কুষ্টিত করিয়া! রাখিবে, ইহা! সে কিছুতেই সহ করিতে পাঁবিত না। বরং অনেকস্থলে আত্ম- সম্মান জ্ঞানটা কোনও মতেই যাহাতে এতটুকুও ব্যাহত না হইতে পাবে, সেজন্ক সে আপনাকে ক্রমাগতই সতর্কঃ সজাগ করিযা রাখিত !

লক্ষ্মী বিতর্কের দিকে না ঘাইয! যদি সহজ, সরলভাবে শিশিরের হাতে ধর! দিত, ব্যাপাবটা কখনই এমন অগ্লীতিকব হইয! উঠিত না লক্ষী যদি সেই দিনই বিনাবাক্যব্যযে চলিযা আসিবার জন্ত প্রস্তত হইতে পাবিতঃ অথবা প্রথম আলাপেব মুহূর্তেই, কোথায শিশিবেব আঘাত লাগিযাছে, তাহা খুবিযা, নাবীর কোমল হস্তে প্রলেপ প্রযোগ কবিতে পাঁবিত, তাহা হইলেও এমন একটা অনর্থ ঘটিত না!

বিনোদিনী আবার ডাঁকিল কহিল, “বুঝি একটা 'নন্থ ঘটিযেছিস্‌)__কি করেছিস্‌ সর্বনাশ, বল্না লক্ষ্মী !”

লক্ষ্মী রুক্ষ কম্পিতম্বরে কহিল, “কিছু করিনি আমি, শুধু ভাব্‌ছি, এই হীন মেঘেজাতটাকে কেন ভগবান্‌ কৃষ্টি করেছেন! এদের একট! কথাও মুখ ফুটে বল্বার সাধ্যি নেই, স্বাধীনতা যেন নাই-ই,-_-”

৫৪

গৌরী

বিনোদিনী কহিল, “সেজন্য ভগবানের দাষ পডেনি যে তোর কাছে জবাবদিছি কর্‌ৃতে আন্বেন!_ দেখ, তোর মামুলি বই পড়া কথাগুলি ছাড়! হিন্দুর ঘরেব বউ তুই, তোর বাপু এত সব কেন? তা+ যাক, শিশিরবাবু কোথায ? খাবারগুলি ও-ঘবে বেখে এসেছি।

লঙ্গমী সংক্ষেপে কহিল, “চলে গেছেন |”

তীব্র বিন্বযপূর্ণ দৃষ্টি লক্ষ্মীর বিবর্ণ মুখের উপর স্থাপন করিয। বিনোদিনী কহিল, “চলে গেছেন !-_সে কিবে ?”

“কি কমূুবং আমি আর ধবে বাখতে পাঁবনে 71 লক্ষমীব স্বব অপমান উপেক্ষার বেদনায কম্পিত হইতেছিল।

বিশ্মিতা বিনোদিনী তাহার ছুই চক্ষু বিস্কাবিত করিঘা কিছুক্ষণ লক্ষ্মীৰ দুখেব দিকে চাতিযা বহিল; তাবপর ব্যথিত- স্ববে কহিল, “ধবে বাখতে পাধুলেই বুঝি ভাল হ'ত লক্ষ্মী !__ ঠাকুব যে কি বুঝেছেন, তা+ তিনিই জানেন মাও তাঁকে একটু বুঝিযে বলেন না।__মেযে তাব শবীব ধুযে কি জল খাবে? “স্বাস্থ 'ভাল থাকবে না” হ্থট্টি ছাঁড়। কথারে বাপু!”

বিনোদিনী ফিবিযা৷ ছুই পা” ছুযাবের দিকে অগ্রসর হইয়া গেল

৫৫

গৌরী

লক্ষ্মী ছুটিযা যাইয়৷ তাহার অঞ্চল টানিয। ধরিল? উদ্বেগপূর্ণ- কঠে কহিল, *কি হবে বৌদি ?”

“কি হবে, তা” আমি কি জানি ?-যেমন তোমাদের স্পরিছাঁড়। বুদ্ধি !_তা” তুই যেতে দিলি কেন?”

“তিনি যে চলে গেলেন, আমি কেমন কবে বাধা দেব, বৌদি?”

"কচি খুকিটি আর কি! বাঁধা দিতে পাযূলি না ত, সঙ্গে চলে গেলি না কেনরে, হতভাগী ?”

বিনোদ বাগিয! গিষাছিল; অঞ্চল টানিযা লইযা সিডির উপর দি! পুম্‌ দুম” করিয! নামিযা গেল !

লক্ষ্মীর দুই চক্ষু অশ্রুপুর্ণ হইয়া উঠিল

পিতাব আদরিবী, মাতার সযত্ববদ্ধিতা লক্ষ্মী, জীবনে কোনও দিন আঘাত পায নাই, ব্যথা জানে নাই) আজ একটা অনমুভূতপূর্বর বেদনাষ তাহাব অন্তব পরিপূর্ণ হইয! উঠিতেছিল! :

কে শী তেজগর্ব্বিত, অভিমানদীপ্ত যুবা, যে এই ধনীর দুলালীর বুকের উপর দিয়! উদ্দাম গতিতে চলিয! গেল! অথচ তাহারই জন্ত অন্তরের কোন্‌ একটা অনির্দিষ্ট স্থান নিবিড় বেদনায় পীড়িত হইয়া উঠিতেছে ! তাহার এই অনাহৃত পীড়নও

৫৬

গৌরী

যেন গ্রীতিতে নন্দিত, সোহাগে বিগলিত ! মাতার স্নেহ, পিতার আঁদরও যেন ইহার কাছে কুস্ঠিত হইয়া পড়িতেছিল

এমন করিয়। লক্ষ্মী কোনও দিন ভাবে নাই; এমন করিয়। বেদনার পীড়ন লাভ করিয়াও সে কোনও দ্দিন এত তৃপ্চি পায় নাই! আজ তাহারই প্রদত্ত বেদনাটুকু লক্ষ্মীর কাছে একটি পরম গোপন সম্পদের মত ঘনে হইতেছিল !

লক্ষ্মী ভাবিল, সত্যই বুঝি তাহার শিশিরের সঙ্গে, কোনও দিকেই ন৷ চাহিয়। চলিয়। যাওয়! কর্তব্য ছিল!

তথন সে দুই হাতে মুখ ঢাকিয়া যেখানে শিশির মুহুর্তপূর্বে দাড়াইয়াছিল, সেইখানেই তুলুষ্টিত হুইয়৷ পড়িয়া কাঁদিতে লাগিল!

৫৭

রি

বিজযার প্রা দুই সপ্তাহ পবে একদিন দুপুরে লক্মী তাহার চিঠির বাক্সটা খুলিযা কাগন্রপত্রগুলি গুছাইতেছিল। কিছু দুরে বমিযা বিনোদিনী গান মাজিতেছিল। একটা দাসী ঘবের মধ্যে একবাব কাজের অছিল্লায প্রবেশ কবিয! বিনোদিণীব কাছ গিয়া ঘুরিযা গের। ঘযাইবাৰ সময মৃদুস্ববে কহিল, "ও-ঘবে কে এসেছে, একবারটি দেখে এম গো, দিদিমণি--!

বিনোদিনী হাতেব পানটা বাটাম বাখিতে রাখিতে চক্ষু তুলিযা৷ দামীর মুখেব দিকে চাহিল, কহিল, ”কেনবে, ন্ুৃখি, তুই বুঝি পানগুলি তৈবী কষ্তে চাচ্ছিদ্‌?”

নৃখদ! ওরফে স্থুথমধী বিনোদিনীর খাস দীসী। বিনোদিনীর বিবাহের পৰ তাঁহার পিতা! এই চত্তুঝ দাসীটিকে মেযেব সঙ্গে পাঠাইয়াছিলেন !

বিনোদিনীকে কোনও কাজ করিতে দেখিলে সুখদা অত্যন্ত চটিযা যাইত! আজও তাহার কথা শুনিয়া বিনোদিনী

৫৮

গৌরী

মনে করিল, সুখদা তাহাকে উঠাইয়া দিয়া তাহার হাতের কাঁজটা করিয়! রাখিতে চাহে

বিনোপিনীর কথা শুনিয়া! স্ুখদা তাহার দুই চক্ষু বিস্তৃত করিয়া কহিল, পন গো না, ডোমার যত ইচ্ছে তুমি কাজ কর, --মামরা হ'লেম দাসী-মান্ষ,। আমাদের অত কাজের সক চ'ল্বে কেন ?”

স্থথদা রাগিয়া৷ চলিয়া যায় দেখিয়। বিনোদিনী হাসিতে হাসিতে কহিল, না, তা” বলিনি গুরে, ক্ষেপি, শোন্‌, কথা শোন!

স্থখদা খানিকটা দূর চলিয়া গিযাছিল, ফিরিয়া আসিতেছে দেখিয়। বিনোদিনী বাটার পানের উপর এলাচির দাঁন। বাঁখিতে লাগল

লক্মী একখানা চিঠি খুলিতে খুলিতে কহিল, “ত! সত্যিই বোঠানঃ তুই অত খেটে মরিম্‌ কেন, বল্‌ ত? দাসীগুলো বসে বসে কাটায়, আর তোর বাপু কাজই ফুরায় না !

বিনোদিনী হাসিয়া কহিলঃ “কি জানি, কাঁজ না! করে আমি থাকতে পারি না। আর এপান টান গুলো সাজা, এমনই বা কি কাজ ! _-__-”

৫৯

গৌরী

সুথদা আবার কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিল; লক্ষ্মী কহিল, “তা গুলো ওবাও বেশ করতে পাবে--”

“._পাযুবে না কেন ?__-পারে»_-তবে -*

"তবে কি?”

বিনোদিনী একটু নিয়ম্বরে কহিল, "কি জানিস্‌, উনি ষে আর কারু হাতের পান খেতে ভাঁল বামেন না, তাই_-” বিনোদিনী হঠাৎ চুপ করিল। তাহার স্থুগৌর কপোলের কাছ দিয়া একটা ভ্রুত শৌণিতোচ্ছ্বাস মুহূর্তের জন্ত দেখা গেল ! একটু চঞ্চল, কম্পিত হস্তেই পানের খিলিগুলি তৈযাঁরী কবিযা কতক একটা ডিবার মধ্যে, কতক বাটার উপরেই রাখিতে লাগিল।

বিনোদিনীর কথা শুনিয়। লক্ষ্মী একটু কি ভাঁবিল তারপব একবার বিশ্মিত-দৃষ্টিতে বিনোৌদিনীর লঙ্জারক্ত অন্দর মুখখানির দিকে চাহিয়া দেখিল।

-“তা কোন কাজই বাদ দিস্নে, বোঠান্‌। জুতো- শেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবই করিস্‌,__বাম্নী তাড়িয়ে পাকের ভার নিয়েছিস। এখন ঝিগুলি তাড়িয়ে দিযে বাসন-মাজ| ঘর-নিকানোটাও আরম্ভ কর্‌!”

বিনোদিনী পান-গুছান শেষ করিয়া উঠিয়া দীড়াইতে

৬৩

গৌরী

প্লাড়াইতে কহিল, “তা” দোষ কি, পরের বাড়ী করতে বাইনে ; মেয়েমাচুয হয়ে জন্মেছি, নিজের হাতে গুছিয়ে, পাক করে যদি শ্বশুর দেওরকে না খাওয়াতে পারলাম, তা হলে 'আর স্থথ কি?”

বিনোদিনীর কথাগুলি লক্ষ্মীর বুকের ভিতরে কোন একট! 'অনির্দি্ তন্ত্রীতে মৃদু আঘাত করিতেছিল! সে আঘাতে, একটা অনম্ুভূতপূর্ধব বেদনার স্থর রহিয়া৷ রচিয্না বুকের মধ্যে সাড়া দ্যা উঠিতেছিল। বেদনাটা যে কিসের, লক্ষ্মী ভাল কবিয়া বুঝিতে পারিতেছিল না৷

একটা হাসির সৃষ্টি করিয়া হুলিয়৷ বেদনাটুকুকে দূর করিবার জন্য লক্মী জোর করিরা কহিল, “তোর আর দেওর নাই-__?”

_-“দেওর না আছে দেওরের মত ননদ তুই রয়েছিস__?”

স্ুখদা লোভ সম্বরণ করিতে না পারিয়। বলিয়া উঠিল, “তা, দেওরের দাদাও "তত রয়েছেন, তাঁর কাজগুলি দাসী বাদীর হাতে ছেড়ে দিতে দিদিমণি আমার একেবারেই নারাজ যেগো!”

"দূর পোঁড়ারমুখী !_তুই ভারি বেড়ে গেছিস্‌ কিন্ত!”

৬১

গৌরী

স্থখদাকে গালি দিতে যাইযাও বিনোদিনী অর্চলে মুখ চাপিযা হাসিতে লাগিল

হ্থখদ|! বিনোদিনীর প্রায় সমবয়ন্কা। ; সে বিশ্বাী এবং নিজগুণে বাড়ীব সকলেরই প্রিযপান্রী বিনোদিনী তাহার প্রতি সথীব্‌ ন্তাষ আচরণই কবিত বলিয! সুখদা কথাবার্তা কতকটা স্বাধীনতা গ্রহণ কবিত। সেন্তম্ত কেহই এই চতুব! দাঁসীটির প্রতি অসস্থষ্ট হইত না।

লক্ষ্মী হাসিতে চেষ্টা কবিল, কিন্তু হাসিতে পাবিল না। বুকের মধ্যে একটা বেদনা থাকিলে, হাঁসিবাৰ সময সেই বেদনাটা বেণীই বাজিযা। উঠে।

এমন সময় বক্ষমধ্যে আঁব একজন দাপী প্রবেশ কবিয। বিনোদিনীব দিকে চাহিযা কহিল, “বৌঠাকরুণ, মাঠাকৃকণ আপনাকে ভাকছেন-_”

দাসীব কথ শুনিষ! স্মখদা! কহিল, “আমাৰ কথা বিশ্বাস কবনি, দিদিমগি এখন দেখে এস কে এসেছেন |”

বিনোদিনী একটু হাসিযা নবাগত! পবিচাবিকাটিকে কহিল, প্মার কাছে কে এসেছেন রে, ক্ষান্ত 2”

"চিনি ন! বৌঠাকৃরুণ |”

বিনোদিনী পাঁনের বাটাটা তাকেব উপব তুলিয়া রাঁখিযা,

গৌরী

একটা পান লইয়া মুখে দিল ) স্থুখদা রাগ করিয়া কহিল, "ও কাঁজটুকুও কি আমর! পান্ুতাম্‌ না, দিদিমণি ?”

বিনোদিনী যাইতে যাইতে কহিল, “কোন্‌ কাজটা রে স্থখি, পান খাওয়াটা না কি? তা” খা না__বাঁটায় রয়েছে,” _স্ুখদা আরও রাগিয় খিড় বিড় করিয়া বকিতে বকিতে চলিয়া গেল। ক্ষান্ত-ঝি আ্বাচলে মুখ চাঁপিয়া ক্রমাগত হাসিতেছিল। লক্ষ্মীর দ্বিকে ফিরিয়! সে কহিল, পশুন্লে, দিদিমণি, বৌঠাকৃকুণের কথা ! শুন্লে হাস্তে হানতে পেটের বত্রিশ নাঁড়ীব বাঁধন ছেড়ে! আর ওই পাগলটাকে ন! ক্ষেপালে বৌঠাকরুণের বেন এক দণ্ডও কাটে না।”

ন্গান্ত চলিয়া! গেল।

লক্ষ্মী চুপ করিষা বসিয়া রহিল ! তাহার মনে হইতেছিল, এই হাসির সঙ্গে তাহার যোগদান করিবার অধিকারটুকু কে বেন হরণ করিধ! লইয়াছে !

বাষ্মের চিঠিপত্রগুলি অন্যমনস্কতাবে নাড়িতে নাড়িতে, একখানি অনেক দিনের পুরাতন চিঠির দিকে তাহার দৃষ্টি পড়িল। চিঠিখানি শিশিবের,_বিবাহের পর প্রথম বিজয়ার আদর সোহাগ সেই নাতিদীর্ঘ লিপিখানি বহন কারয় আনিয়াছিল !

৬৩

গৌরী

লক্ষী একবার চিঠিথানি পড়িল, আবার পড়িল ; বুকেব ভিতর একটা অব্যক্ত যাতন! ক্রমেই বাড়িযা উিতেছিল ; কোনও মতেই যেন তৃপ্তি পাইতেছিল না! চিঠিখানি সে যখন তৃতীযবাত্র পড়িযা শেষ করিল, তথন তাহাব দুই চক্ষু অশ্রপূর্ণ হইয! উঠ্ভিল। বাম্ধুলিপুম্পরন্ত অধবপুট উচ্ছ্ুসিত আবেগে মুদুকম্পিত হইতে লাগিল !

শিশিব যদিও বাগ কবিয! চলিয। গিযাঁছিল, তবু এবাবও লগ্মী আশা করিযাছিল, অন্ততঃ এই একটি বিশেষ দিনে__এই বিজয়ায_-ঘে দিনে শত্রু শক্রকে ক্ষমা কবে-__-এই শ্রীতিব ভাশ্াব লুস্তিত করিষা বিলাইবার দিনটিতে__শিশিবেব অমূর্ভ প্রেম একখানি ক্ষুদ্র লিপিব ভিতর ধৰা দিয় তাহাকে আনন্দিত করিবে! দিনের পর দিন লক্ষ্মী তাহার ব্যর্থ আশা লইযা৷ বসিয়! রহিয়াছে, কিন্তু নিষ্ঠুর শিশির লক্ষমীকে শুধু দুইটি ক্ষার অক্ষরের ভিতব দ্রিযাও জানা নাই বে, সে তাহাকে অন্ততঃ একটি দিনের জন্যও ক্ষমা করিতে পারে।

লক্ষ্মী একবার ভাল করিয়! নিজের অন্তরের দিকে চাহিয়া শিহরিয়া উঠিল। কোন্‌ রসহীন মরুর মধ্যে সে আপনার তৃধিত চিত্তকে আনিয়া ফেলিযাছে ! মুহূর্তেব জন্ত মায়ামরীচিক! রচনা করিয! দিয়া যে লুকাইয়াছেঃ তাহাকে এই রসহীন মরুব

৬৪

গৌরী

মধ্যে কোথায় সে খুজিয়৷ পাইবে? হৃদয়ের অভাবকে ষে দূর করিতে পারে, পঙ্কিল দৈন্যকে ডুবাইয়া, লুকাইয়া রাখিতে পারে, তৃষ্কাকে যে শাস্ত করিতে পারেঃ সে কোথায় !-_-সে (কোথায়!

বিনোদিনীর প্রবল কর্মম্পৃহার মধ্যে আজ লক্ষ্মী যে তথ্যের সন্ধান পাইযাছিল, তাহা তাহার কাছে একেবারেই নৃতন। সে এতদিন নিজের দিক দিয়াই স্বামীকে চিনিতে শিখিয়াছে ; স্বামীর দিক দিযা নিজেকে চিনিতে শিখে নাই

এতকাল যেন একটা দীর্ঘ পার্বত্যপথ অতিবাহন করিয়া আনিয়া, আজই যেন, এক অপ্রত্যাশিত মুহূর্তে, সে এমন একটি ফল-পুষ্প-শ্রোতন্থিনী-বহুল শ্ঠামায়মান উপত্যকার সম্মুখে আসিয়া ধ্লাড়াইয়াছে, যেখানে তাহার ক্ষুধা, তৃষ্ণা, অভাব, দৈন্য, সকলই নিংশেিতরূপে মিটিযা যাইতে পারে ।-_কিন্ত প্র উপত্যকা প্রবেশ-পথের চাঁবিকাঠিটি যাহার কাছে, সে তাহাব পার্ষে নাই) কাছে নাই,-_যত দূর দৃষ্টি চলে তাহার মধ্যেও তাহাকে দেখা ঘাঁয় না, খু'জিযা পাওয়া যায় ন1। লক্ষ্মী বুঝিল, এমন কবিয়া দ্রিন কাঁটিবে না। নারীর দিন এমন করিয়া কাটিতে পারে না! কিন্তু কোথায় শ্রেষপথ, ধনীর দুলাী চোখের জলে তাহাঁও ভাল করিয়। দেখিতে পাইতৈছিল না

৬৫

গৌরী

হাতের চিঠি বাক্সে তুলিয়া রাখিয়া অঞ্চলে চক্ষু মার্জনা করিয়া লক্ষ্মী উঠিয়া! দ্াড়াইল। খোলা দুয়ারের দিকে দৃষ্টি পড়িতেই লক্ষ্মী দেখিল, সেখানে এক হাস্প্রফুল্লমুখী নারী দণ্ডাযমান রহিয়াছে ; তাহার নয়নে ন্লেহ-শ্রাবী দৃষ্টি-_অধর- প্রান্তে যুছু হাঁসির রেখা !

লক্ষ্মী সবিন্ময়ে চিনিলি, সেই নারী গৌরী !

৬৬

৯০

সেদিন সন্ধ্যার পর বাসায ফিরিযা আসিযাই শিশির বুঝিল, বাঁসায মৃতন লোক আফিযাছে। সদব দরজার কাছেই চাঁকবের ঘব; শিশির চাকবকে ভাঁকিযা জিজ্ঞামা! করিল, সছৃত্ব পাইল না। বুঝিলঃ সন্ধ্যাব গাড়ীতে কাহার! আমিযাঁছে। সি'ডিতে আল্লো ছিল না। অন্ধকারে কিছুক্ষণ দীডাইযা থাঁকিয| কাহাৰ অল্পষ্ট কণম্বব লে শুনিল। সে স্বর যাহার অন্থমান হইল শিশিব দেখিল সংবাদ না দিয! তাহার আমা একেবারেই অসন্ভতব। বিশ্ষিত কৌতূহল শিপিব ধীরে ধীবে সিডি বাঁহিয! উপবে উঠিযা আসিল।

দুমাবেব কাছে দীডাইযা শিশিব দেখিল) কক্ষমধ্যে কেহ একখানা বড থালাব উগব কতকগুলি খাবার গুছাইয়| মাজাইযা বাঁখিতেছে। বিশ্মিত-কঠে শিশিব ডাঁকিল “বৌদি !”

হাশ্তমুখী গৌবী শিশিবের দিকে ফিরিতেই শিশির দ্রতপদে কক্ষমধ্যে গ্রবেশ করিল। সেষে কি করিবে কিছুই বুঝিতে পারিত্েছিল না।

৬৭

গৌরী

"তুমি, বৌদি, তুমি কথন, কেমন করে এলে? যে আমার স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে যে ।-_-”

গৌরী হাসিয়া! কহিল, “জুতোটা ছেড়ে এই পি'ড়িটার উপরে বস দেখি; থাবারগুলির সঙ্গে একটা পরিচয় স্থুর, করে দিলেই বুঝতে পারবে এখন, যে আমাদের আনাটা ঠিক স্বপ্রই নয়, শিশির 1৮

“আমাদের বল্ছঃ তা হলে তুমি একলাটি আসনি বৌদি |"

“বাঃ! আমি একলাটি আঁস্ব কেমন করে শিশির ?” গোৌরীর হাস্ত-তরল কণ্ঠম্বর শুনিযা শিশিরের অতকিত বিল্ময়ের ভাঁবটা অনেকটা! কাটিয়া গেল!

“সত্যি বৌদি, আমি কিযে কন্পুবং আর কি যে ব্ল্ব, কিছুই ঠিক পাচ্ছিনে। এমন হঠাৎ ছাদ ফুঁড়ে যে তোমর। এখানে এসে নামবে, তা আমি ম্বপ্েও মনে করতে পারিনি, যেন একেবারে সেই 'দেবগণের মর্তোে আগমনের” মতই একটা মস্ত বিস্ময়কর ব্যাপার।” শিশির ক্রমাগতই বকিয়া যাইতেছিল। গৌরী বাধ! দিয়! কহিল, *ওসব কথ! খাঁবার- গুলির সম্ববহার কল্গুতে কমুতেই বল, শ্িশির। এর পরে বাজান থেকে এলে আমি আবার রাধতে যাব।”

৬৮

গৌরী

শিশির খাবার মুখে দিতে দিতে কহিল, “বাজার থেকে কে আস্বে?

গৌরী হাঁসিয়া উঠ্টিল। অগ্রতিভ-স্বরে শিশির কহিল» “এই দেখ) আমি কি যে ছাই বকে যাচ্ছি! দাদীর কথাট! একবারটি জিজ্ঞাদাও করিনি,_তিনি-_”

পবাজারে গেছেন, এখনি ফিমুবেন, তোমার যে গেরভ্তালী এমনি করেই না! কি শরীর বাঁচিযে বিদেশে থাকৃবে ?”

“এর মধ্যে আমার গৃহস্থালীট। দেখে নিয়েছ বৌদি ?”

“ই, তোমার তরকারীর চুবড়ি, ডালের হাড়ি, তেলের ভাঁড়, কিছুই আমার দেখতে বাঁকী নেই শিশির!”

শিশির খাইতে খাইতে একবার ঘরটাঁর চারিদিক দেখিয়া লইল। “বা রে! তুমি এত কথন করলে? আমার ঘরের দু-বছরের জঙ্্রাল যে তুমি ছু-ঘণ্টায় সাফ. করেছ!” গৌরী দেশ হইতে কিছু তরকারি সঙ্গে আনিয়াছিল, সেগুলি বাহির করিয়া লইয়া কুটিতে আরম্ভ করিল। একটা কথ! তাহার মুখে আসিয়! বাঁধিয়া যাঁইতেছিল, একটু ইতন্ততঃ করিয়া, একটু মৃছ হাসি জোর করিয়া ঠোটের কাছে আনিয়! ধীরে ধীরে গৌরী কহিল, “ইঃ! দু-ঘন্টার মধ্যে এত জঞ্জাল সাফ কর! কি আমার কর্ম শিশির? আমার চেয়েও সব

৬৯

গৌরী

কাজ যে সহমগুণে স্থন্দর করে কমতে পারে, সেই লক্ষ্মীর সাহাষ্য না পেলে এত আমি একলাটি কিছুতেই করে উঠতে-_”

কথ! শেষ করিবার পূর্বেই গৌরী চক্ষু তুলিয়া একবার শিশিরের মুখের দিকে চাহিয়া দেখিল ; গুরু-আঘাত পাইলে মানুষ যেমন কিছুক্ষণ একবারে নির্বাক হুইয়াই থাকে, এবং তাহার মুখশ্রী যেমন একেবারেই রক্তশূন্ত হইয়। যায়, শিশির তেমনি আহতের মতই আর্ত্দৃষ্টিতে গৌরীর মুখের দিকে চাহিয়া রহিয়াছে! তাহার ললাটের উপর দিয়া ঘর্ম্বিন্দু ত্রুত ফুটিয়া উঠিতেছিল। খাবারের থালার উপর শিখিলমুষ্ট দক্ষিণ হত্ত রক্ষা করিয়া মে যখন সন্পুখের দিকে কতকটা ঝু"কিয়! পড়িল, তখন হাতের তরকাবী ফেলিয৷ দিয়া গৌরী শিশিরের কাছে ছুটিয়া আমিল। পশ্চাৎ হইতে তাহাকে কোলের কাছে টানিয়া রাখিয়া গৌরী ত্রাসকম্পিতকণে ডাকিল, "শিশির! শিশির !_-ও লশ্মী! জল নিষে আয়, শিশির যে কেমন হয়ে পড়ল-_”

শিশির হঠাৎ উঠিয়। সোজা হইয়া বমিল, এবং তীব্র-কণে কহিল, “না, না, কারু জল আন্তে হবে না!”

গৌরী কোমল-কঠে কহিল, “ছি শিশির, এত দুর্বল তুই!”

"না, না, আমি দূর্বল নই, বৌদি! তোমরা নিজেদের

পও

গৌরী

উপর 'অপমানটাঁকে টেনে নিয়ে আমাকে যে কতখানি ব্যথিত করে তুলেছ, তা যদ্দি বুঝতে; তা” হলে আজ এমন করে__*

“তোর ব্যথা আমি বুঝিনি, শিশির! একথ! তুই যে হ্বপ্রেও ভাবতে পাঁরিস্ঃ তা” আমি মনে করিনে ! ব্যথাটাঁকে নিজের বুকের মধ্যেই পুষে না রেখে, যদি আমার সঙ্গে ভাগ নিতে পারিস্ঠ তাই মনে করেই আজ তোর কাছে ছুটে এসেছি শিশির !-_আঁজ তুই এমন অবসন্ন য়ে পড়লে চলে কই ?”_ উচ্ড্ুসিত অশ্রুর আবেগে গৌরীর কাতর কোমল ন্েহজড়িত কণ্ন্বর রুদ্ধ হইয়া আসিল !

পাশের কক্ষ হইতে জল লইযা লক্ষ্মী দুয়ারের কাছ পর্য্যস্ত আসিযাছিল, শিশিবের কথা শুনিয়া থমকিয়! দঁড়াইল। একটা প্রবল ধিক্কারে তাহার চক্ষু ছুইটি মুহুর্তের জন্ দীপ্ত হইয়া উঠিল, তারপরই গুঞনপ্রাস্ত দিয়া অশ্রমার্জনা করিষ! লক্ষ্মী কিরিয়া গেল! একটা ভাঙ্গা চেয়ারের উপর মাথা রাখিযা স্তনের মতই পড়িযা রহিল

৭১

ভাটার জল নাঁমিয়া যাঁওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেমন নদীর ভিতরকার পন্বচিহ্ন জাগিযা উঠে এবং জানাইয়া দেয় যে, জোয়ারের জলে ঢাকা থাকিলেও মলিন পন্ক-চিন্ধটা একট সত্যকারই জমাট্বীধ! ক্লে, বহুদিন হইতে রহিয়াছে) তেমনি আঙ্জকার উচ্দ্লামের আবেগটা কমিয়া যাইতেই, মনের ভিতর- কার অন্তহীন বেদনার আবিল চিহ্ৃগুলি সর্বপ্রথমেই শিশিরের চোখে পড়িয়া গেল! এগুলি যে ঠিক আজ্রকার নহে, কত দিন পূর্বব হইতেই একটু একটু করিয়া জমিয়া উঠিযাছে; একথাটা মনে করিয়া সে শিহরিয়া উঠিল!

এই আবিশ্লতীর নীচে তাহার প্রাণটা যে একেবারেই হীপাইয়া! উঠিয়াছে, এবং মে যে কোনে! মতেই স্বস্তি পাইতেছে না, এট! তে| নি:সন্দেহই একট নগ্ন সত্য !

এলার্ব ওয়াল! ঘড়ি নিয়মমত চলিতে চলিতে হঠাৎ একসময়ে এলাপ্ধ বাঁজিয়া উঠিয়৷ যেমন একটা বিশেষ মুহূর্তকে জানাইয়া দিয়া আবার নিজের মনে চলিতে থাকে, আজকার ব্যাঁপারটাও কতকটা ঠিক তেমনি ভাবে ঘটিয়! গেল

গৌরী

বাড়ীস্থুত্ধ সকলের মনেই আজ একযোগে এই কথাটাই জাগিয়। উঠিযাছিল ষে, এভাবে আর চলিতে পারে না, এবং ঠিক এই মুহূর্ত হইতেই আগেকার ক্রটী-বিচ্যুতি, তুলচুকগুলিকে আর বাড়িতে না দিযা, হয একটা নূতন পথ এখনই ধবিভে হইবে; না হয, পরস্পরকে সকল দাযিত্ব হইতে মুক্তি দিয়া একেবারেই মুখ ফিরাইযা বসিতে হইবে !

মান্থষের জীবনে এই মুহূর্কটাই সর্বাপেক্ষা শুভ বা অশ্তভ মুহূর্ধ ! এই সন্ধিক্ষণে উপব শভবিষ্বতেব ছোট বড সকল ব্যাপারই নির্ভর করিতেছে! এবং জীবনেব অগ্লীতিকর বাঁপারগুলি এমনি একটা মুহূর্ভে পৌছিযা গেলেই চুড়ান্ত মীমাংসা সহজেই আমিযা পড়ে!

তখন এই মীমাংসার জন্ত কোনও একটা আযোজনেবও যেমন দরকাঁব হয় নাঃ তেমনি কাহাকেও কিছু বলিযাঁও দিতে হয় না এবং সব চেয়ে বড কথা৷ এই যে, ইঙ্গিতেব অপেক্ষা যে যাহার স্থানটা দখল করিয়! দীড়াইযা রহ্যাছে, হহাও দেখা যায!

তবটাঁব মধ্যে লক্খ্মী একলাটা অনেকক্ষণ চুপ কবিয! বমিযা বহিল। শিশিব তাঁহাকে যে আঘাঁত করিধাছে, আঙগ আর সে তাহার সমালোচন। করিতে বসিল না; বার বার শুধু

৭৩

গৌরী

এই কথাটাই মনেব্র মধ্যে নাড়াচাড়া করিতে লাগিল, যে, এর একটা শেষ হওয়া দরকার হইয়া পড়িয়াছে; এতদিনকার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত, যে ভাবেই হউক, আজই হইয়া গেলে বীচ ষায়।

মনের মধ্যের দাগগুলিকে মিলাইয়! দেওয়াই আজ যে সব চেষে বেশী প্রয়োজন হইয়া পড়িয়াছে, কথাটা এই মুহ্‌র্তের পুর্ববে এমন করিয়া আর কোনও দিন সে অনুভব করে নাই!

পাশের ঘরে ছুই ভাইয়ের এবং গৌরীর কথাবার্তা চলিতেছিল। তাহার মৃছ শব্ধ লক্গমীর কাণে আসিতেছিল। কিন্ধ সে দিকে মোটেই তাহার মন ছিল না।

জানালার কাছটাতে উঠিয়া আসিয়। বাহিরের আকাশের দিকে নিনিমেষ চোখে কতক্ষণ চাহিয়া ছিল, তাহা তাহার জ্ঞান ছিল না; কিন্তু চাহিয়। চাহিয়া যথন দুই চোখ জ্বাল করিয়া উঠিল, তথন সে মুখ ফিরাইয়৷ লইল।

নির্মল আকাশ তখন লক্ষ মাণিকথচিত চন্দ্রাতপের শোভা পাইতেছিল এবং এই গরম বিচিত্র আচ্ছাদনটীর নিয়েই বিপুলা পৃথ্বী সুষুপ্ত রহিয়াছে

কর্ম-কোলাইল থামিয়া গিয়াছে) শুধু উদ্দাম বাছু-

৭8

গৌরী

প্রবাহ মাঝে মাঝে ছুটিয়া আসিয়া ঘরের দরজ| জানালার কবাট- গুলির উপর মাথা থু"ড়িয়৷ যাইতেছে

মুখ ফিরাইতেই লক্ষ্মী দেখিল, এই ঘরের দিকেই গৌরী আসিতেছে

ছুয়ারের দিকে সনিয়া আসিয়া সহজ-কঠে কহিল, “তুমি এসেছ দিদি, একলাটী বসে বসে সত্যি হ্াীঁপিষে উঠেছি যে ভাবলাম" আমাকে ভুলেই বা গেলে ।”

কথাগুলি বলিতে গলাটা ধরিা আনিতেছিল ; তবু জোর করিয়! হাঁসিম! কহিল, “কিন্তু তোমাব মতলবও 'আমি কিছু বুঝতে পারলাম না দিদি! বাড়ী যাবার পথে তোমার এই বাসাবাড়ীটাও যে পড়বে, তা আমায় একবারটীও জান্তে দাওনি তো !”

বলিয়াই মুহূর্তের জন্য গোরীর মুখের উপর চোথ দুটা তুলিয়া ধরিল।

আজ এই মুহূর্কে লক্ষ্মীর মনের কথাটী গৌরী ঠিকই বুঝিয়াছিল, ভাই চোখের পাতা জলে ভিজিযা উঠিলেও লক্ষ্ীকে টানিয়। বুকের কাছে আনিয়া! হীসিমুখে কহিল, “এই মেয়ে মান্থৃষ জাতটাকে যে অনেক কিছু সহা করে চল্তে হয়, এজাতের পাঁচ বছরের মেয়েটাও যে সে থবর রাধে, এটা তো পুরুষরা

৭৫

গৌরী

একেবারেই বোঝে না, লক্ষ্মী! ওদের মান অভিমান গর্ধ সবি জাতের কাছে হার মেনে যাবেই, যদি জাতট। একটু সঙ করে, একটু বুদ্ধি খাটিয়ে চলতে পারে ! তোর ভুলচুক কিছু হয়েছে আমি কোনে! দিনই মনে করিনি আমার যত ভয় শিশিরকেই নিয়ে !” বলিয়াই একটু চুপ করিয়! থাকিয়া হাসিমুখে কহিল, “আর ওকে নিয়ে এই এতটুকু কাল থেকে আমিই কি কম তৃগেছি রে! আজ তো! দিগ্বিজয়ী হয়েছে, লক্ষ্মী, কিন্তু ওর ছুরম্তপণা কি এতটুকুও কমেচে__কমেনি তো! কিন্তু আমি এও জানি” ওর মত তালও আর কেউ নয় 1৮

ছুই চোখের পাঁতা জলে ভিজিয়! উঠিয়াছে ; অধর-প্রান্তে মৃদু হাঁসির রেখা লাগিয়। রহিয়াছে) যে কত বড় গভীর ন্নেহের পরিচয়, লক্ষ্মী তাহা! মনে মনে নিংসন্দেহ বুঝিয়া রুদ্ধকণ্ে কহিল, “তোমার পায়ের কাছে এসে দীড়াবার আগেই যখন আমার সহম্র অপরাধের বিচার তুমি শ্রেষ করে রেখে দিয়েছ, দিদি, তথন আমার বল্বার আর কিছুই তো রাঁধখনি! সেদিন মুখ ফিরিয়েই বাপের বাড়ীর ঘরের দৌরের কাছটিতে যখন তোমাকে দেখলাম, তখনই মনে হ'ল, আমার মুক্তির খবর ভূমি জানিয়ে দিলে! কিন্তু একটা কথা আজও আমি ঠিক্‌

৭৬

গৌরী

বুঝতে পারিনি দিদিঃ যে তুমি কেমন করে আমার সব অপরাধ ভূলে গেলে এবং ক্ষমা কন্ুলে!”

গলার স্বর ধরিয়া আমিতেছিল ) বী-হাতের মুঠির মধ্যে ডান হাতের আঙ্গুলগুলি চাপিয়া রাখিযা সেইদিকে চাহিয! চাহিয়৷ কহিল, “বাপের অতবড় বাড়ীটার মাঝে শুধু একজন ছিল যে আমাকে শক্ত কথা বল্বার সাহস রাখত! সে আমার বৌদি! তাকে আমি ভযও কম্গুতাম, কিন্ত মনটা মাঝে মাঝে তার উপর অগপ্রসন্ন হ'যে উঠত ! সে কিন্ত তোমাকে ঠিকই চিনেছিল! চলে আন্বাব দ্রিন সে যথন তোমার হাতে আমাকে ধরে দিয়ে কেদে তোমাব বুকেই মুখ লুকালঃ তখন আমি তাকেও ঠিক্‌ চিন্লাম এবং তোমাকেও জান্লাম! শুধু তারই একটা কথায় আমি আমার জীবনের শ্রেষ্ট পথটি খুঁজে পেযেচি এবং আমি যে তোমাদের কতথানি ব্যথা দিয়েছি, তাঁও জেনেছি 1”

লক্ষ্মীর ছুই চোথ জলে ভবিয! গেল। কোনও কথা না বলিযাঁ গৌরী তাহাকে বুকের কাঁছে টানিযা আনিষ৷ পরম স্লেহে মাথায় হাত বুলাইয়া! দিতে লাগিল

লক্ষী কহিল, পন! চাইতে তোমার ক্ষমা! তো পেযেছিই, দিদি, কিন্তু যা, না চাইতেই পাঁওযা যায, তা৷ চাইবার স্পৃহা নাকি

৭৭

গৌরী

মান্গষের আরো বেণী করে হয়; তাই আজ তোমার ক্ষমা আমাকে চেয়ে নিতেই হবে!” বলিয়াই লক্ষ্মী নীচু হইয়া ছুই হাতে গৌরীর পায়ের ধুলা মাথায় তুলিয়া লইল।

লক্্মীকে টানিয়া তুলিয়া গৌরী কহিল, “পাগলামিতে তুই যে আমার শিশিরের চেয়ে একটুও কম যাঁস্‌নে, তা, আমি ঠিক্‌ বুঝেছি! আমার দেবর হলেও, যে ছোট ভাইয়ের মত একেবারেই নয়) যে চিরদিন কোলের ছেলের মতই দুরস্ত রয়ে গেল! ওর সব অত্যাচার আব্দার যে সহ করে নিতে পার্বে, সেই, যে কত ভাল, তা” বুঝতে পাসুবে ! আজ তোকে আমি এই আশীর্ববাদই কন্গুচি, যে, ওকে চিন্তে যেন তুই কোঁনে। দিনই ভূল করিস্‌নে? লক্ষ্মী

গৌরীর বুকের মধ্যে মাথা রাখিয়া লক্ষ্মী চুপ করিয়৷ রহিল তাহার ইচ্ছ। হইতেছিল, এই পরম স্নেহশালিনী নারীর ছুই পায়ের উপর মুখটা শু'জিয়! কিছুক্ষণ কাদিয়! লয়

শচীনের সঙ্গে কথাবার্তী শেষ করিযা, শিশির যখন তাহার ঘরের মধ্যে টেবিলটার কাছে আসিয়া ্াড়াইল, তখন রাত প্রায় বারোটা টেবিলটার উপরকাঁর পরীক্ষার থাতাগুলি আজ আর দেখিয়া উঠা সম্ভব নয় মনে করিয়া ভায়েরীট। টানিয়া লইল এবং সনন্ত দিনের ব্যাপারগুলি লিখিয়! রাখিতে

৭৮

গৌরী

গিয়া হঠাৎ শিশিরের মনে হইল, ভূল ভ্রান্তি তাহার নিজেরও যথেষ্ট রহিয়াছে, তবু সে এই থে দিনের পর দিন বিচারকের আঁসনটিই দখল করিয়া! বসিয়া রহিয়াছে» কেন?

যে তাহার মায়ের চেয়েও বেশী, সে গৌরীকেই সে আঘাত কিছু কম করিয়া! করিয়াছে ?

আজকার এই ব্যাপারটাকে এতটা বিস্রী সেই করিয়া তুলিয়াছে! এই দুর্বলতার পরিচয় কত দিক্‌ দিয়াই তে! দিয়াছে কিন্তু সবেরই তো একটা সীম! আছে শেষ আছে!

লেখা বন্ধ করিয়! ছুই হাতের মধ্যেখ মাথাটা রাঁখিয। শিশির চুপ করিয়া বসিয়া রহিল।

নিস্তব্ধ ঘরটার মধ্যে শুধু দেওয়ালের গায়ের ঘড়িটাঁর টিক্‌ টিক শব্দ সুস্পষ্ট হইয। উঠিতেছিল, ধোলা জানালার পথে ঘাতাস বহিয়া আসিযা শিশিবের উত্তপ্ত কপোলে ললাটে মুদুষ্পর্শ দিয় যাঁইতেছিল এবং টেবিল ল্যাম্পটার পাশে পাশে ফু দিয়া আলোটাকে মধ্যে মধ্যে উজ্জল করিযা তুলিতে ছিল

সন্তর্পণে কথন দুয়াবরটা খুলিয়া গিয়াছে ঠিক্‌ টেবিলটার কাঁছটীতেই কাপড়ের থস্‌ খস্‌ শব্দ শুনিয়া মুখ তুলিয়া চাহিতেই

৭৯

গৌরী

শিশির দেখিল, বাহুবেষ্টনীর মধো লক্ষমীকে টানিয়া রাখিয়া শ্মিতমুখী গৌরী দাড়াইয়া রহিয়াছে

অপূর্ব হাস্তোজ্জল মৃত্তি! দৃষ্টিতে ন্সেহ গ্রীতি ক্ষরিত হইতেছে! নির্ঘাল ললাট আলোকলেখা-পাতে স্সিগ্ক হইয়া রহিয়াছে !

শিশির বুঝিল, এই নারীকে কোনও আঘাতই যেন বিধে না? তুচ্ছ মান অভিমান ইহার হাঁসিকে মলিন করিতে পারেনা!

বাঙ্গালীর ঘরেরই চিরন্তন বধুটী, বিশ্বের অমূর্ত মাতৃ- ৃন্তির প্রতিমার মতই গৃহে গৃহে প্রতিষ্টিতা রহিয়াছে!

শিশির চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া দীড়াইয়। কহিল, “তোমার মুখে আমার মায়ের মুখের ছায়া এমন করে ফুটে উঠতে দেখি, বৌদি) যে, আমি একেবারে অবাক্‌ হয়ে যাই ।-_-এ কেমন করে হয় বৌদি? ?

একটা সরল নগ্ন শিশু তাহার কৌতৃহল মিটাইবার জন্যই যেন ছুটিয়া আনিয়। মায়ের কাছে প্রশ্ব করিতেছে !

্বর্গগতা৷ শাশুড়ির উদ্দেশে যুক্ত হয়! ছুই হাত ললাটে স্পর্শ করিয়া হাসিমুখে গৌরী কহিল, “তোকে আমার হাতে দিয়ে বাবার সময় তিনি যে আমায় ছুয়ে আশীর্বাদ জানিয়ে গিয়ে-

৮৪০

গৌরী

ছিলেন, শিশির ! তীর স্পর্শ বার্থ হতে পারে না তা যদি তাঁকে তোর মনেই পড়ে, তাতে বিম্ময়ের কিছুই নেই,_তুই যে তারই দেওয়া আশীষ, শিশির 1”

ছুই চোখের পাতা ভিজিয়! উঠিতেছিল ; একটুকাল চুপ করিধ! থাকিয়া গৌরী কহিল; “সে কথা যাক! লক্ষ্মীর সঙ্গে আমার বোঝা-পড়া হয়ে গেছেঃ শিশির! ছোট ছেলের চেয়েও বেশী, পেটের মেযেব চেয়েও বড় এই লক্্রী,_-এই লক্ষমীকে সর্ধপ্রকারে স্বখে রাখবার ভার তোমার উপর দিয়ে বাচ্ছি, শিশিব! আমাব 'অন্তরোধ উপরোধ নয়, আদেশ বলেই জান্বে, বুঝলে ত!”-_তাঁরপর ঘরটার চারিদিকটা একবার দেখিবা লইমা হাঁসিযা কহিল, “ভয পেও না, গৌসাহ, তোমার এই ছোট্ট বাঁসাঁটাতে ওকে বেথে যাচ্ছিনে, তা'চ্ডে আমিও স্বশ্তি পাব নাত! আর ওকে ছেড়ে থাক! যে 'আঁন।ন কর্ম নম, তা” আমি এই তিন দিনেই বেশ করে জেনেছি 1৮ ব্লিয়াই লক্মীর হাত টানিয়া লইয়া শিশিরের হাতের উপবূ তুলিঘা দিল এবং পর-মুহূর্কেই ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল।

শিশির টেচাইঘা বলিমা উঠিল, “পাচ বছর বয়পের সময় ম! চলে গেছ লেন, লক্ষমীঃ আঙ্গ এতকাল পরে তাকে সাম্নেও

৮১

গৌরী

দেখলাম। তার গল্লার আওয়াজও ন্লাম! মাকে গ্রণীম কর লক্ষী, গ্রণাম কমু!

গলায় স্্ীটা জয়া, মুহ্পূর্বে যেখানে গনী দাড়াইযাছিপ) ঠিক সেইথানটায লুষ্িত হত্যা গ্রাম করিয়া ল্ধী যখন উঠিয়া দীড়াইন। তখনও শিশির স্তিতের মতই যারের দিকে চাহিয়া দীড়াই়্া ছিল। তাহার দুই গণ বাহিয়া চোখের জল নামিয়াছে!

যারের বাহিরে, বান্দার অন্ধকারের মধ গৌরী অশ্রসি্ দুই চোখ অঞ্চাগ্রান্ত মার্জনা! করিতেছিল।

পর্ণ

কয়েকখানি উৎকষ্ট পুস্তক

ভশ্জ্সস্স_্রীবতীঙ্গুমোহন সেনগুপ্ত

ভ্াঙগ্গেলস পুজা বধোলজন খ্যাতনামা লেখক-লেখিক! শ্রম্পাতু-__শ্রীমাণ্কিচন্্র ভট্টাচার্য্য অন্বাক্_শ্রশৈলবালা ঘোষজায়া

অমজ্লা ্রীউপেন্্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায ন্বত্চ্যত-প্রবিশ্বপতি চৌধুবী এম-এ অঞশ্রস্সম্স- শ্রীযতীন্্রমোহন লেনগণ্ত ওউদ্াসীন্র সাভি- রবীন্দ্রনাথ মৈত্র ন্বিস্পম্খ্যক্স ডাঃ শ্রীনরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত এম-এ অমুল্ভল্5_ ভীউপেন্্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ভ্ন্াাজ্ছভ্ভ-_শ্রীশৈলজানন্দ যুখোপাধ্যায ব্রিষ্েন্সর খাভা প্রীনরেশচন্দ্র সেনথপ্ শ্রিল্রহ-সিকলন্ম কা শ্রীহীবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যাষ িন্বাক্্- আগ্রবোধকুমাব সান্তাল সন্ক্রাঙ্ষষী- শ্রীসরোজকুমাব রাযচৌধুবী "মুক্তি" শ্ানাশীলতা। সিংহ

অমুল্লত্ত- অরীপ্রেমেন্্র মিত্র

গুরুদাদ চট্টোপাধ্যায় এগ সম্ম, ২০৩/১।১, কর্ণওযালিস বট, কলিকাতা

সি

ন্‌ ১]

১]1*

১1৩ ১৭ ২০ ২২ ১1 ১]৩

১1

১1৩ ১1৪

১২

উপহারের ভাল ভাল বই

হীঅতিত্তাকুমার সেনগুপ্ত জান তত্যাুজল ২. ভকল্মন্নী ভকম্চবক্সিম্চ্ ১২ জীনৈলবাল। ঘোষজায় ল্িস্পন্ভি ২0০ স্ন্সিভা। ২. মণীল্্রলাল বনু নভেল ভ্ডভ ১৩ শ্রম্মজ্পা ১৮ জীপ্রেমেক্্ মিত্র প্টুত্জুুন অরিন ১।০ রবীক্সনাথ মেত্র স্পা ১0০ ভ্িল্োচ কল্বিলাত্ষ ১২ প্রজগদীশচন্্র গুপ্ত ন্লো্হ্হষ্ন টু

হহতশাত্শেক্র ্ভাভ্লা। ১২.

শ্রউপেন্নাথ ঘোষ এম-এ ভিতর দ্শায্দোকল্লেন্ল ব্রত ২২ জঁসৌরীন্্রমোহন মুখোপাধ্যায় সাহন্লিক। ২.

১1৩

গ্মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় জ্ম্মন্মী ২২.

ভভ্ডস্ী মাসী উপ্রবোধকুষার সান্তাল ননন্খীন্ন সুন্নত ২. জল্লী চন্ভষ্য ১৯.

উমসরোজকুমার রায়চৌধুরী

আক্কাম্ণ ওও চ্যত্ভিকা। ২২

স্াান্ন্নিবাস্ ঞীজ্যোতির্শরয়ী দেবী

ভাজা সর

শ্রসীতা দেবী বি লনা ২০ হাত্ছ আলা ২.

প্রীআশালত। [সিংহ স্পল্লিজ্বতুল্ন মত্ত

গনরেশ্বর ভট্টাচার্য সাননাপপ্পুলী

হ্ীদুক্ত ব্যোমকেশ বন্দ্যোপাধ্যায় সত্খল্র সারি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপধ্যার

সবক

১০ ১০

১৬

১1০

১০

গুরুদাস চট্টোপাধ্যায এগ সন্স্‌, ২৩1১।১, কর্ণওয়া'লিস্‌ দ্রঃ কলিকাত।